ভূমিকাঃ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে আনীত প্রস্তাবকেই বিল বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ, জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গৃহীত প্রাথমিক পদক্ষেপ তথা আইনের যে খসড়া উত্থাপন করা হয় তাকে বিল উত্থাপন বলে। সুতরাং আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে আনীত প্রস্তাবই বিল। এছাড়াও আইনের খসড়া প্রস্তাবকে বিল হিসাবে অবিহিত করা হয়।
সরকারি বিল ও বেসরকারি বিলের পার্থক্যঃ সরকারি বিল ও বেসরকারি বিল উভয় প্রকারের বিলই জাতীয় সংসদ থেকে পাস হয়। উভয় প্রপকারের বিলই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে পাস হয়। উভয় বিলের মধ্যে যথেষ্ট সামঞ্জস্য থাকলেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে সরকারি বিল ও বেসরকারি বিলের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করা হলো-
১। সরকারি বিল সংশ্লিষ্ট সরকার দলীয় মন্ত্রী কর্তৃক উত্থাপিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ, সরকারের প্রশাসনিক বিভাগের প্রধান কর্তৃক উত্থাপিত হয়ে থাকে। অন্যদিকে যে কোন সংসদ সদস্য কর্তৃক (সরকার বা বিরোধী দল কর্তৃক) উত্থাপিত উত্থাপিত হয়ে থাকে তাকে বলে বেসরকারি আইন।
২। সরকারি বিল সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পূর্বে, তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি মোতাবেক সরকারী বিল উত্থাপনের জন্য মন্ত্রীকে বিল উত্থাপনের ৭ দিন পূর্বে সংসদ সচিবের কাছে নোটিশ প্রদান করতে হয়। অন্যদিকে বেসরকারী বিল উত্থাপনের পূর্বে, বিলের প্রতিলিপি সংসদে স্পীকারের নিকট নোটিশসহ প্রদান করতে হয়। এরপর, বিলটি সংসদে উত্থাপনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। অনুমতির পর, বিলের পক্ষে-বিপক্ষে মতামত এবং শেষে ভোটের আয়োজন করা হয়। বিলের প্রস্তাবটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে সম্মতি পেলে তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। বিল উত্থাপন করতে চাইলে তাকে সংসদ সচিবের কাছে লিখিত নোটিশ দিতে হয়।
উপসংহারঃ মোটকথা, জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বিলসমূহের মধ্যে সরকারি বিল ও বেসরকারি বিলের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য থাকলেও উভয় প্রকার বিলই গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধী দল বিলের সমালোচনা করলেও সংসদে সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ফলে তা পাশ করতে সাধারণত কোন সমস্যায় পড়তে হয় না।
0 মন্তব্যসমূহ