ধ্বনি ও শব্দের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর


প্রশ্নঃ শব্দ কাকে বলে? ধ্বনি ও শব্দের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।

ভূমিকাঃ মানুষ মনের ভাবকে সার্থকভাবে প্রকাশ করতে যেসব অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি উচ্চারণ করে, তাকে শব্দ বলে। শব্দ ভাষার মৌলিক উপাদান। আর ধ্বনি শব্দের প্রাণ। ধ্বনি ও শব্দ উভয়টি বাক্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও উভয়ের মাঝে কতিপয় সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।

শব্দের সংজ্ঞাঃ 

১. সাধারণ কথায় মানুষের মুখনিঃসৃত এক বা একাধিক ধ্বনি বা বর্ণ মিলিত হয়ে যদি একটি অর্থ প্রকাশ করে, তবে তাকে শব্দ বলে। যেমন- কলম, আমরা, মা, গোলাপ ইত্যাদি।

২. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, “অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে শব্দ বলে।”

৩. ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “অর্থবোধক ধ্বনিকে শব্দ (word) বলে। কোনো বিশেষ সমাজের নরনারীর কাছে যে ধ্বনির স্পষ্ট অর্থ আছে, সেই অর্থবোধক ধ্বনিই হচ্ছে, সেই সমাজের নরনারীর ভাষায় শব্দ।”

৪. অশোক মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এক বা একাধিক ধ্বনির সমন্বয়ে তৈরি অর্থবোধক ও উচ্চারণযোগ্য একককে শব্দ বলা হয়।”

ধ্বনি ও শব্দের পার্থক্যঃ ধ্বনি ও শব্দের মধ্যে পার্থক্যসমূহ নিম্নরূপ—

ধ্বনি 

শব্দ 

১. মানুষের মুখ থেকে নিঃসৃত শব্দের ক্ষুদ্রতম অংশের নাম ধ্বনি।

১. এক বা একাধিক অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা বর্ণ মিলে তৈরি হয় শব্দ। 

২. ধ্বনি তৈরি হতে বাগযন্ত্রের সাহায্য লাগে। 

২. বাগযন্ত্রের সাহায্য ছাড়াও শব্দ তৈরি হতে পারে।

৩. ধ্বনির লিখিত রূপের নাম বর্ণ।

৩. একাধিক বর্ণের মিলনে গঠিত হয় শব্দ।

৪. একাধিক ধ্বনি একত্রিত হয়ে তৈরি হয় শব্দ।

৪. একাধিক শব্দ মিলিত হয়ে গঠিত হয় বাক্য।

৫. ধ্বনি শব্দের ক্ষুদ্রতম অংশ।

৫. শব্দ বাক্যের ক্ষুদ্রতম অংশ।

৬. ধ্বনি উচ্চারিত হলে তা কেবল শ্রুতিগোচর।

৬. কিন্তু শব্দ উচ্চারিত হলে তা শ্রুতিগোচর ও শব্দের লিখিত রূপ দৃশ্যগোচর।

৭. পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ধ্বনির মিলনে হয় সন্ধি।

৭. আর পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক শব্দের মিলনে হয় সমাস।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক