বাংলাদেশে সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ বিতর্ক কীরূপ?


প্রশ্নঃ বাংলাদেশে সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ বিতর্ক কীরূপ? আলোচনা কর। 

বাংলাদেশে সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ বিতর্ক (The Generalist and Specialist Controversy in Bangladesh): বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা মূলত ব্রিটিশ প্রশাসনিক কাঠামোরই একটি প্রতিচ্ছবি। ঔপনিবেশিকতার প্রভাব থেকে আমাদের প্রশাসন ব্যবস্থা এখনও সম্পূর্ণভাবে মুক্ত নয়। সাবেক পাকিস্তান ব্রিটিশদের নিকট থেকে একটি শক্তিশালী, সনাতন সাধারণজ্ঞ ধরনের আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলো। বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে নি। সনাতন প্রশাসনিক কাঠামো অনুযায়ী এ দেশের প্রশাসনে নীতি নির্ধারণ ও নীতি প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যবধান অতি তীক্ষ্ণ ও সুস্পষ্ট। সাধারণজ্ঞের অধিকাংশ নীতি নির্ধারণ সংস্থায় বা সচিবালয়ের পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা নীতি প্রয়োগকারী সংস্থা বা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।

সচিবালয়ের কর্মকর্তাগণ অধিক ক্ষমতাঃ সাধারণত সচিবালয়ের কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট অফিসের প্রতিপক্ষ কর্মকর্তা থেকে অধিক ক্ষমতা, মর্যাদা ও অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সাধারণজ্ঞদের ভূমিকা অতি ব্যাপক এবং গুরুত্বপূর্ণ; তাদের গতিশীলতা সুবিস্তৃত। সচিবালয় হতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট অফিস, করপোরেশন, বোর্ড, এমন কি আঞ্চলিক প্রশাসনের ক্ষেত্রেও সাধারণজ্ঞরা একচেটিয়া (সাবেক সিএসপি ও ইপিসিএস) আসন দখল করে আছেন। নীতি প্রয়োগকারী সংস্থা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এ সংস্থাগুলোকে সচিবালয়ের অর্থাৎ সাধারণজ্ঞদের পূর্ণ আদেশ ও নিয়ন্ত্রণাধীন রাখা হয়। প্রশাসনিক বিধি বা নিয়মাবলি অনুযায়ী (Rule of Business) বিশেষজ্ঞরা কারিগরি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রস্তাব সচিবালয়ে প্রেরণ করেন। সচিবালয়ের কর্মকর্তা, সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব বা উপ সচিব এরাই এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যদিও এরা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ততটা জানেন না। তথাপি এঁরা বিচারকের ভূমিকা পালন করেন বিধায় এতে বিশেষজ্ঞরা খুব ক্ষুব্ধ হন। কেননা নীতিনির্ধারণ ক্ষেত্রে তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করা হয়। বিশেষজ্ঞ হলেন তথ্য সরবরাহের প্রাণকেন্দ্র, অথচ সিদ্ধান্ত প্রণয়ন ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অতি নিষ্ক্রিয়। এখানে স্পষ্টতই তাদেরকে অবমূল্যায়ন বা উপেক্ষা প্রদর্শন করা হয়।

আধুনিক কারিগরি ও পরিকল্পনার যুগেঃ আধুনিক কারিগরি ও পরিকল্পনার যুগে এরূপ ধারণা পোষণ করা নির্বুদ্ধিতার কাজ যে, যে ব্যক্তি কিছুই জানেন না কোন ব্যাপারে জড়িত নন এবং তিনিই একজন উত্তম ও সফল প্রশাসকে পরিণত হবেন। যেখানে সাধারণ বুদ্ধি (Common Sense) কোন সহায়ক উপাদান এবং পথপ্ৰদৰ্শক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয় এমন অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর প্রধান কারণ হলো বিষয়টি এমনই জটিল যে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ ব্যতীত তা উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। একজন প্রশাসককে সর্বক্ষেত্রেই কাজে লাগানো যায় এরূপ মতবাদ এখন অচল।

দেশে নতুন চাকরি কাঠামো প্রবর্তনের পূর্বেঃ দেশে নতুন চাকরি কাঠামো প্রবর্তনের পূর্বে এ দুই শ্রেণীর প্রশাসকদের মধ্যে বেতন, পদোন্নতি এবং চাকরি সুবিধার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ব্যবধান ছিল। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন পেশাগত শিক্ষা 'ও প্রশিক্ষণের বিনিময়ে ও সামান্য বেতনে নিযুক্ত হতেন এবং সহসা তাদের পেশাভিত্তিক চাকরি জীবন (Career Service) শেষ করতে হত। তাদের জন্য প্রশস্ত পদোন্নতির পথ ছিল না। পদোন্নতির সোপান সাধারণজ্ঞদের তুলনায় সংখ্যা, মর্যাদা ও বেতন-ক্রমের দিক থেকে ছিল অপ্রতুল। একজন বিশেষজ্ঞকে ঊর্ধ্বতন পদে পৌঁছাতে সাধারণজ্ঞের চেয়ে অনেক বেশি সময় চাকরি করতে হত। সেই ঊর্ধ্বতন পদটিতে বিশেষজ্ঞ আদৌ পৌঁছতে পারতেন কি না তারও কোন নিশ্চয়তা ছিল না। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকৌশল বিষয়ক বোর্ড বা কর্পোরেশন, কারিগরি বা আধা কারিগরি সংক্রান্ত বিভাগগুলোতে সাধারণজ্ঞদের নিয়োগ করা হত ফলে পদোন্নতির সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে যেত। 

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে প্রশাসনিক চাকরি কাঠামোঃ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে প্রশাসনিক চাকরি কাঠামোর পুনর্বিন্যাসের ফলেও বাংলাদেশে সাধারণজ্ঞ বনাম বিশেষজ্ঞের দ্বন্দ্বের অবসান এখনো হয় নি। বিভিন্ন সময়ে সাধারণজ্ঞ প্রশাসকদের বিরুদ্ধে অন্যান্য বিশেষজ্ঞ কার্যভিত্তিক চাকরির সদস্যরা একটি সমন্বয় কমিটি করেছেন এবং সমন্বয় কমিটি ২৩টি চাকরির সদস্যদের নিয়ে গঠিত। উল্লেখ্য যে, এ কমিটি ১৯৯১ সালের ১৪ এপ্রিল তাদের চাকরিগত সমস্যার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সংবলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর নিকট পেশ করেন এবং এখনো দাবিগুলো মেনে নেয়ার জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। তাদের মতে সিভিল সার্ভিস প্রশাসন এ ক্যাডারের সদস্যগণ এখনো একচেটিয়াভাবে সচিবালয় এবং অঞ্চলভিত্তিক পদসমূহ দখল করে রয়েছেন। তাঁদের পদসংখ্যা, পদোন্নতি এবং ক্যাডারের মোট সংখ্যা দ্রুত বাড়িয়ে নিয়েছেন। সেখানে তারাই সর্বসর্বা। অভিযোগের সুরে সমন্বয় কমিটি অভিযোগে বলেছেন যে, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যেখানে টেকটিক্যাল বা প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োজন, সেখানে অনভিজ্ঞ সাধারণজ্ঞ কর্মকর্তাদের দ্বারাই সকল কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হচ্ছে। ফলে উন্নয়ন পরিকল্পনাসমূহ সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে পরিচালিত ও বাস্তবায়িত হতে পারছে না।

সাধারণজ্ঞদের সমালোচনায় লেখকগণ উচ্চকণ্ঠঃ পিটার ড্রাকার সাধারণজ্ঞদের (Black Box) ‘কালোবাক্স' নামে অভিহিত করে বলেন, এ শ্রেণীর কর্মকর্তাগণ প্রশাসনিক অজ্ঞানতার কারণে অন্যের কাজে হস্তক্ষেপ করেন এবং বাংলাদেশে এ অজ্ঞ অনভিজ্ঞ ‘কালোবাক্স'-রূপী প্রশাসকদের আধিপত্যই সর্বত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ বক্তব্যের সমর্থনে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জেলা প্রশাসকের পদ হলো ভূমি রাজস্ব কালেক্টর ও ম্যাজিস্ট্রেটের পদ। বর্তমানে ভূমি রাজস্বের গুরুত্ব বহুল পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে, কারণ ভূমি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণের চাইতে ভূমি রাজস্ব আদায়কারী কর্মীদের পিছনে অনেক বেশি খরচ হয়। তবে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান মামলার পরিমাণ বিপুলভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাজের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। 

প্রটোকলঃ বর্তমানে জেলা প্রশাসকগণ বেশিরভাগ সময়ই প্রটোকল ও সমন্বয়কারীর দায়িত্বে নিয়োজিত। জেলা প্রশাসকের এরূপ কাজ অযৌক্তিক বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন। কেননা বর্তমানে মন্ত্রণালয়গুলোর কর্ম পরিচালনার জন্য বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তা রয়েছেন। জেলা প্রশাসকের অস্তিত্ব এখানে অপ্রয়োজনীয়। জেলা ও থানা পর্যায়ের সমন্বয়ের কাজ একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে অর্পণ করাই উত্তম। তাতে বিভিন্ন ক্যাডার শ্রেণীর সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ববিরোধ ও ঈর্ষার অসুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি হবে না বরং কর্ম উদ্দীপনাও বাড়বে।

ক্যাডার সার্ভিসঃ ১৯৭৬ সালের বেতন ও চাকরি কমিশন সুপারিশ অনুযায়ী সকল ক্যাডার সার্ভিসের সদস্যদের মেধা, অভিজ্ঞতা ও বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের ভিত্তিতে সচিবালয়ে উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত পদে নিয়োগের জন্য সিনিয়র সিভিল সার্ভিস গঠিত হয়। কিন্তু দেখা গেল সেখানেও এককভাবে বিসিএস প্রশাসনের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও আধিক্য বজায় রয়েছে। উপরন্তু এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৭৬ এ গঠিত সিনিয়র সার্ভিস পুল অবলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং মতিন কমিটির সুপারিশ অনুসারে যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিবের পদসমূহের জন্য যথাক্রমে শতকরা ৬০ ভাগ ও ৬৫ ভাগ পদ বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের জন্য সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সিভিল সার্ভিস গঠনঃ বাংলাদেশ সরকার ১৯৮০ সালে পুনর্বিন্যস্ত চাকরি কাঠামোর মাধ্যমে কার্যভিত্তিক একক একটি সিভিল সার্ভিস গঠন করেন। এ সার্ভিসের আওতাভুক্ত সকল কার্যভিত্তিক ক্যাডারকে সমমর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয় এবং সকল ক্যাডারে একই রূপের বেতনস্কেল ও পদোন্নতির সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করা হয়। সংস্কারকৃত এ চাকরি কাঠামোর মূল উদ্দেশ্য ছিল সিভিল সার্ভিসে কোন বিশেষ ক্যাডারের প্রাধান্যের অবসান ঘটানো এবং মেধা, দক্ষতা, বিশেষজ্ঞজ্ঞান ও কারিগরি প্রশিক্ষণকে প্রাধান্য দেয়া। সে প্রচেষ্টা অনেকাংশে সফল হয়েছে।

ব্যবসায় নীতিঃ ১৯৭৫ সালে যে ব্যবসায় নীতি (Rules of business) তৈরি করা হয়েছে তাতে সচিবদের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা করা হয়েছে। তাছাড়া ১৯৮৬ সালের মানক্রম অনুসারে সচিবকে ১৭তম এবং কর্পোরেশন চেয়ারম্যান ২০তম, পরিদপ্তরের মহাপরিচালককে ২২তম স্থান দেয়া হয়েছে। এরূপ স্থান ও পদমর্যাদা বিন্যাসে এটা স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞ অপেক্ষা সাধারণজ্ঞই অধিক মর্যাদা ও ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। অর্থাৎ চাকরি ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ক্যাডারের আধিপত্যই দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত।

আমাদের সুপারিশঃ সুতরাং সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বাংলাদেশের প্রশাসনিক তথা সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, যার অবসান ঘটানো জরুরি। সে লক্ষ্যে অভিজ্ঞ মহল কতকগুলো সুপারিশের কথা উল্লেখ করেছেন। সুপারিশগুলো নিম্নরূপঃ 

১। রাষ্ট্রীয় চাকরি কাঠামোতে শ্রেণীবিভাগ পরিহার করতে হবে। বিশেষজ্ঞ ও সাধারণজ্ঞ প্রশাসকদের মধ্যে বেতন, পদোন্নতির সুযোগ, চাকরি ক্ষেত্রের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা, মর্যাদা প্রভৃতি ক্ষেত্রের বৈষম্য দূর করতে হবে।

২। বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান দক্ষতা ও ভূমিকা সম্পর্কে সাধারণজ্ঞদের সুস্পষ্ট ধারণা থাকা আবশ্যক। বর্তমানে বিশেষজ্ঞের মতামতকে সচিবালয়ের কনিষ্ঠতম অফিসার কর্তৃক পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা প্রহসনেরই নামান্তর। কারণ একজন প্রকৌশলী বা চিকিৎসক বা বিজ্ঞানীকে একজন বিসিএস প্রশাসনের সাধারণ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কর্মকর্তা কিভাবে যাচাই করার যোগ্যতা রাখেন তা অবশ্যই খতিয়ে দেখার বিষয়। সুতরাং এ ব্যাপারটিকে কোনভাবেই অব্যাহত রাখা উচিত নয়।

৩। সচিবালয়ের বিভিন্ন ধরনের ঊর্ধ্বতন পদে সাধারণজ্ঞ কর্মকর্তাদের একচেটিয়া আসন সংরক্ষিত রাখার রীতি বা বিধান পরিবর্তন করতে হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন চাকরির মধ্য থেকে সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ উভয় শ্রেণীর কর্মকর্তাদের নিয়ে সরকার একটি একক তালিকা প্রস্তুত করেছেন যা পলিসি পুল নামে পরিচিত। যথাযথ জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার পর তাদের দিয়ে সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন পদগুলো পূরণ করার ব্যবস্থা করা হয়। অর্থাৎ উচ্চ পদগুলো এখন আর কোন বিশেষ ক্যাডারের জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে না।

৪ । চাকরির শর্তাবলি সম্পূর্ণ অনমনীয় না হয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য হওয়া উচিত। কারিগরি বা কৌশলগত বিভাগে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হলে তারা তাদের বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতার পরিপূর্ণ প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন।

সবশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ সরকার সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞের দ্বন্দ্ব সম্পর্কে বর্তমানে যথেষ্ট সচেতন। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞদের সচিবালয়ের বিভিন্ন পদসহ উচ্চ পদগুলোতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সরকারের এ পদক্ষেপ অদূরভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থার মধ্যে এ দু'শ্রেণীর মধ্যকার সংঘাত দূরীভূত করে একটি উন্নয়নমূলক সুস্থ প্রশাসন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়। ড. সৈয়দ আবদুস সামাদ এক সেমিনারে অভিমত প্রকাশ করেন যে, “প্রশাসনিক ব্যবস্থায় যে এলিট উপাদান বর্তমান, তা যে কোন আকারে বিদ্যমান থাকবে, আর তীক্ষ্ণধী ও উন্নত বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন কর্মকর্তারা, তা তারা সাধারণজ্ঞই হোন, আর বিশেষজ্ঞই হোন প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নেতৃত্ব দান করবেন।” মোটকথা, যে কোন দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সাধারণজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধার সমন্বয় সাধন করতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক