জনমতের গুরুত্ব কি?


প্রশ্নঃ জনমতের গুরুত্ব তুলে ধর ৷

অথবা, জনমতের তাৎপর্য আলোচনা কর।

অথবা, জনমতের ইতিবাচক ভূমিকা আলোচনা কর ।

অথবা, জনমতের প্রস্তাব উল্লেখ কর।

ভূমিকাঃ আধুনিক যুগ গণতন্ত্রের যুগ। জনপ্রতিনিধিই গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। জনমত অনুমোদিত পন্থাতেই গণতান্ত্রিক সরকারের শাসনকার্য পরিচালিত হয়ে থাকে। কাজেই বলা হয় গণতন্ত্রের প্রাথমিক শর্ত হলো সতর্ক ও সুচিন্তিত জনমত। (An alert and intelligent public opinion is the fast essential of democracy.)

জনমতের গুরুত্বঃ নিম্নে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা করা হলোঃ

১. জনস্বার্থ রক্ষিতঃ শক্তিশালী জনমত সর্বদা সরকারকে জনস্বার্থমূলক নীতি অনুসরণে বাধ্য করে কোন বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ নয়, বরং জনগণের সঠিক কল্যাণই হবে সরকারি কার্যাবলির উদ্দেশ্য। সুতরাং সরকার চাপে পড়ে কল্যাণমুখী : প্রকল্প হাতে নিতে বাধ্য।

২. সরকারের স্থায়িত্বঃ গণতন্ত্রে জনমতের ভিত্তিতে যেমন সরকার গঠিত হয় তেমনি জনমতের ভিত্তিতে সরকারের পতন হয়। জনমত সরকারের বিপক্ষে চলে গেলে সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। এদিক দিয়ে জনমতের গুরুত্ব অপরিসীম।

৩. স্বৈরাচার রোধঃ গণতন্ত্রে জনগণই স্বৈরাচার রোধ করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সর্বদা শাসকদের দৃষ্টি রাখতে হয়। জনমতের সঙ্গে সংগতি রেখে সরকারি নীতি ও শাসন কার্য পরিচালিত হচ্ছে কি না। ফলে স্বৈরাচারী হতে পারে না।

৪. জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনঃ গণতন্ত্রে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে আইন প্রণয়ন করা হয়। কাজেই জনগণ সেই আইন সহজেই মেনে চলে। জনগণ নিজেরাই আইন তৈরি করেছে বলে মনে করে। ফলে সরকারি নীতি কার্যকারিতার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

৫. সরকার নিয়ন্ত্রিত হয়ঃ জনমত বিপক্ষে গেলে সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। এই ভয়ে সরকার জনস্বার্থ বিরোধী কোন কাজ করতে সাহস পায় না। তাই সরকার সঠিক কর্মসূচি প্রণয়ন করে জনকল্যাণমুখী কাজে ব্রতী হয় ও জনকল্যাণের জন্য কাজ করে যায়।

উপসংহারঃ আলোচনার শেষ প্রান্তে এসে আমরা বলতে পারি যে, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে ফলপ্রসূ করতে জনমতের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা জনমত প্রতিষ্ঠা থাকলে একদিকে যেমন জনগণের অধিকার রক্ষা পাবে, অন্যদিকে শাসক ন্যায় পরায়ণ থাকবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক