অংশীদারী করবারের (Partnership Business) শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর


প্রশ্নঃ অংশীদারী কারবার কাকে বলে? 
অংশীদারী করবারের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর। 

ভূমিকাঃ একাধিক ব্যক্তির মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে গঠিত বিশেষ সম্পর্ক হলো অংশীদারী কারবার। চুক্তি হলো অংশীদারী কারবারের মূল ভিত্তি। অংশীদারী কারবার গঠন এবং তা পরিচালনার জন্য ১৯৩২ সালে অংশীদারী আইন তৈরি করা হয়।

অংশীদারী কারবার (Partnership Business) কাকে বলেঃ অংশীদারী আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী-

সকলের দ্বারা পরিচালিত অথবা সকলের পক্ষে একজন দ্বারা পরিচালিত কোন ব্যবসার মুনাফা নিজেদের মধ্যে বন্টনের উদ্দেশ্যে চুক্তি করা হলে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাকে অংশীদারী কারবার বলে।

অংশীদারী প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক নয়। ইচ্ছা করলে এটি নিবন্ধন করে পরিচালনা করা যায় আবার নিবন্ধন না করেও পরিচালনা করা যায়।

অংশীদারী কারবারকে যৌথ প্রতিষ্ঠানও বলা যায়। এর প্রত্যেক ব্যক্তি আলাদা আলাদাভাবে ‘অংশীদার' হিসেবে গণ্য।

অংশীদারী করবারের শ্রেণিবিভাগঃ নিম্নে অংশীদারী করবারের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ করা হলো- 

অংশীদারী কারবারকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

(১) সাধারণ অংশীদারী কারবার, 
(২) সীমাবদ্ধ অংশীদারী কারবার।

(১) সাধারণ অংশীদারী কারবার : সকলের দ্বারা পরিচালিত অথবা সকলের পক্ষে একজন দ্বারা পরিচালিত কোন ব্যবসার মুনাফা নিজেদের মধ্যে বন্টনের উদ্দেশ্যে চুক্তি করা হলে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাকে অংশীদারী কারবার বলে। সাধারণ কারবারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ জন এবং ব্যাংকিং ব্যবসার জন্য সর্বোচ্চ ১০ জন নিয়ে অংশীদারী কারবার গঠিত হয়।

এই কারবারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

(ক) ঐচ্ছিক অংশীদারী কারবার : অংশীদারী কারবারের স্থায়িত্ব বা মেয়াদকাল নির্দিষ্ট না থাকলে তাকে ঐচ্ছিক অংশীদারী কারবার বলে। [ধারা-৭]

(খ) নির্দিষ্ট অংশীদারী কারবার : অংশীদারী কারবারের স্থায়িত্ব বা মেয়াদকাল নির্দিষ্ট থাকলে তাকে নির্দিষ্ট অংশীদারী কারবার বলে। [ধারা-৮] 

এই কারবারকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায় :

(i) নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গঠিত অংশীদারী কারবার : অংশীদারী কারবার নির্দিষ্ট মেয়াদ বা সময়ের জন্য গঠিত হলে তাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গঠিত অংশীদারী কারবার বলে।

(ii) নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গঠিত অংশীদারী কারবার : অংশীদারী কারবার ফ্রি চালারী কোন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গঠিত হলে তাকে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গঠিত অংশীদারী কারবার বলে।

(২) সীমাবদ্ধ অংশীদারী কারবার : কোন অংশীদারী কারবারের সকল অংশীদারের দায় অসীম না হলে অথবা এক বা একাধিক সদস্যের দায় চুক্তি অনুযায়ী সীমাবদ্ধ হলে তাকে সীমাবদ্ধ অংশীদারী কারবার বলে। সীমাবদ্ধ অংশীদারী কারবারে দুই ধরনের সদস্য থাকে। (ক) দায় অসীম এমন অংশীদার এবং (খ) দায় সীমাবদ্ধ এমন অংশীদার।

উপসংহারঃ অংশীদারী কারবারের মূল ভিত্তি হলো চুক্তি। অর্থাৎ চুক্তির উপর ভিত্তি করে অংশীদারী কারবার পরিচালিত হয়। অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কি বা তাদের একে অপরের প্রতি দায়িত্ব কি বা তাদের অধিকার কি তা চুক্তি দ্বারা নির্ধারণ করা হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক