প্রশ্নঃ সুদানের দারফুর অঞ্চলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রুলিং আলোচনা কর।
ভূমিকাঃ যুদ্ধ এমনি এক বিষয় যা কেউ কামনা করে না। তবে যুদ্ধ বললে শুধু ধ্বংস বা ক্ষতির বিষয়টি সামনে আসে। কিন্তু যুদ্ধ কোন পক্ষের জন্য মঙ্গলও বয়ে আনে। অর্থাৎ যুদ্ধ কখনো কখনো অনিবার্য হয়ে পড়ে। যুদ্ধের বিকল্প আর কোন পথ থাকে না।
সুদানের দারফুর অঞ্চলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রুলিংঃ ২০০৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সুদানের দারফুর অঞ্চলে একটি গেরিলা যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। এ সময় সুদান সরকার কৃষ্ণাঙ্গ সুদানবাসীর উপর অত্যাচার চালায়। এ সময় সুদানের স্বাধীনতাকামী সেনাবাহিনী এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যারফলে সরকার পক্ষ দারফুর অঞ্চলের কৃষ্ণাঙ্গদের উপর আক্রমণ করে। এখানে অনেকে গণহত্যার শিকার হন। কিন্তু সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আল বশির উক্ত আক্রমণ বা গণহত্যা অস্বীকার করেন। তিনি জানান তার সরকার এই হত্যার সাথে জড়িত নয়৷
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দারফুর অঞ্চল সম্পর্কে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটরকে বিষয়টি অবহিত করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ভোট দান করা থেকে বিরত থাকে।
২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত জানজায়িদ নেতা আলী কুশেব এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ হারুনকে মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধ অপরাধে অভিযুক্ত করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু সুদান সরকার জানায় যে সুদানের নাগরিকদের বিচার করার ক্ষমতা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নেই। সুতরাং আলী কুশেব এবং আহমেদ হারুন আত্মসমার্পণ করবে না।
২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আল বশির এর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের ১০টি অভিযোগ দায়ের করেন। ১০টি অভিযোগের মধ্যে গণহত্যার জন্য ৩টি, মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য ৫টি এবং হত্যার জন্য ২টি।
২০০৯ সালে ওমর হাসান আল বশিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর গণ হত্যার অভিযোগ গুলি যোগ করার জন্য আপীল করেন। কিন্তু উক্ত আদালতের প্রি-ট্রায়াল চেম্বার জানায় যে, সুদানের প্রেসিডেন্ট এর গণহত্যার নির্দিষ্ট অভিপ্রায় ছিল এমন বিতর্কের পক্ষে যুক্তি নেই।
২০১০ সাল ৩টি অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ওমর হাসান আল বশিরকে অভিযুক্ত করে। রোম সংবিধির অধীনে এটিই ছিলো কোন রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ।
উপসংহারঃ যুদ্ধ কারো কাম্য নয়। তবুও কোন কারণে যুদ্ধ সংঘটিত হলে যুদ্ধের নিয়ম মেনে যুদ্ধ করতে হয়। এসময় নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ্য ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। এই সকল বিষয় না মানা হলে পরবর্তীতে তাদেরকে অপরাধী হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।
0 মন্তব্যসমূহ