কোম্পানির সংজ্ঞা দাও। একটি কোম্পানির বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর


প্রশ্নঃ কোম্পানি কাকে বলে? একটি কোম্পানির বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর। 

ভূমিকাঃ যে কোন কোম্পানি একটি ব্যক্তি। তবে এটি কৃত্রিম ব্যক্তি হিসেবে গণ্য । কিছু ব্যক্তি একত্রিত হয়ে মূলধন সংগ্রহ করে কোম্পানি গঠন করে। কোম্পানিকে যৌথ মূলধনী কোম্পানিও বলা হয় । যে কোন কোম্পানি ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী নিবন্ধন করতে হয়।

কোম্পানি (Company) কাকে বলেঃ কোম্পানি আইনের ২(১-ডি) অনুযায়ী-

কোম্পানি বলতে এই আইনের অধীনে গঠিত ও নিবন্ধিত কোন কোম্পানিকে বোঝাবে।” মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে কতিপয় ব্যক্তি মিলিত হয়ে এবং যৌথ মূলধন সংগ্রহ করে প্রচলিত আইন অনুযায়ী যে কারবার গঠন করে তাকে যৌথ মূলধনী কোম্পানি বা কোম্পানি বলে। যে কোন কোম্পানি ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী নিবন্ধন করতে হয়। যার ফলে এটি কোন কোম্পানি কৃত্রিম ব্যক্তিস্বত্তা সৃষ্টি করে।

একটি কোম্পানির বৈশিষ্ট্যঃ নিম্নে একটি কোম্পানির বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো-

(১) কৃত্রিম ব্যক্তি : কোম্পানি এক ধরনের ব্যক্তি। তবে এটি স্বাভাবিক ব্যক্তি নয়। এটি ১১ আইন দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তি। ব্যক্তি হওয়ার কারণে কোন কোম্পানি নিজ নামে মামলা দায়ের করতে পারে। আবার বিবাদী হিসেবে মামলা মোকাবেলা করতে পারে।

(২) আইন দ্বারা তৈরি প্রতিষ্ঠান : যে কোন কোম্পানি ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী নিবন্ধন করতে হয়। যার ফলে এটি আইন সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য। 

(৩) চিরন্তন অস্তিত্ব : কোন কোম্পানির মালিকের মৃত্যু হলে বা বরখাস্ত হলে বা অবসর গ্রহণ করলেও কোম্পানির অস্তত্ব শেষ হয়ে যায় না।

(৪) ব্যাপক মূলধন : একটি কোম্পানি জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রি করে ব্যাপক মূলধন সংগ্রহ করতে পারে।

(৫) শেয়ারের মূল্য : কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কম থাকে। যারফলে ধনী-গরীব সকল শ্রেণির মানুষ এর শেয়ার ক্রয় করতে পারে।

(৬) সীমাবদ্ধ দায় : কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের দায় তাদের ক্রয়কৃত শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ। ক্রয়কৃত শেয়ারের মূল্য পরিশোধ করলে শেয়ারহোল্ডারের আর কোন দায় থাকে না।

(৭) শেয়ারের সহজ হস্তান্তরযোগ্যতা : শেয়ার মালিক তাদের ইচ্ছা অনুসারে যে কোন সময় কোন ব্যক্তির নিকট শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারে।

(৮) শেয়ার মালিকদের পরিবর্তনশীলতা : শেয়ার মালিকগণ যেহেতু সহজেই তাদের শেয়ার হস্তান্তর করতে পারে সেহেতু শেয়ারের স্বত্বাধিকারী যে কোন সময় পরিবর্তন হতে তা পারে। অবশ্য এর ফলে কারবারের অস্তিত্বের কোন পরিবর্তন হয় না।

(৯) মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা আলাদা স্বত্ত্বা : শেয়ার মালিকগণ হলেন কোম্পানির মূল মালিক। কিন্তু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা থাকেন তারা তৃতীয় পক্ষ কেউ হতে পারে। যারা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন তারা শেয়ার মালিকদের দ্বারা নির্বাচিত হন।

(১০) গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা : এক্ষেত্রে অধিকাংশ শেয়ার মালিকদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়; অর্থাৎ কোম্পানিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু থাকে।

(১১) স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সমিতি : সাত বা তার বেশি এবং পঞ্চাশ এর কম সংখ্যক ব্যক্তি ইচ্ছা করলেই একটি কোম্পানি গঠন করতে পারে। অর্থাৎ একে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত একমি সমিতি বলা যায়।

(১২) স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান : এটি কোম্পানি আইনের অধীন একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। বাইরের কেউ এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এমনকি বৈধ কোম্পানির কাজের উপর সরকারও বিনা কারণে হস্তক্ষেপ করে না।

উপসংহারঃ কোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তা ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত হতে হয়। কোন পাবলিক কোম্পানি বা বৃহৎ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হলে তা পরিচালনা করা সম্ভব না হলে যেমন ছোট কোম্পানিতে পরিণত করা যায় তেমনি কোন প্রাইভেট বা ছোট কোম্পানির পরিসর বৃদ্ধি করতে চাইলে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে তা করা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক