আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে কে? আন্তর্জাতিক আদালতের উপদেশমূলক অভিমতের আইনগত মর্যাদা কি?


প্রশ্নঃ কে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে বা মামলা দায়ের করতে পারে?

অথবা, কোন ব্যক্তি কি আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে বা মামলা দায়ের করতে পারে? 

কারা আন্তর্জাতিক আদালতের নিকট পরামর্শ চাইতে পারে? 

আন্তর্জাতিক আদালতের উপদেশমূলক অভিমতের আইনগত মর্যাদা কি?

ভূমিকাঃ জাতিসংঘের অন্যতম একটি অঙ্গ হলো আন্তর্জাতিক আদালত। এটি জাতিসংঘের প্রধান বিচারবিভাগীয় অঙ্গ। কিছু রাষ্ট্র ব্যতীত পৃথিবীর প্রায় সকল রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আইনগত বিষয়ে কোন বিরোধ দেখা দিলে এই সংস্থা তার বিচার করে৷

কে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে বা মামলা দায়ের করতে পারে অথবা কোন ব্যক্তি কি আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে বা মামলা দায়ের করতে পারেঃ আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধির ৩৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী-

কোন ব্যক্তি আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে না বা মামলা দায়ের করতে পারে না। শুধু কোন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আদালতে কোন মামলার পক্ষ হতে পারে।

সুতরাং বলা যায় কোন ব্যক্তি নয় শুধু কোন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে বা মামলা দায়ের করতে পারে।

কারা আন্তর্জাতিক আদালতের নিকট পরামর্শ চাইতে পারেঃ আন্তর্জাতিক আদালতের যতগুলি এখতিয়ার বা ক্ষমতা আছে তার একটি হলো উপদেশমূলক এখতিয়ার।

সাধারণ পরিষদ বা নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক প্রেরিত আইনগত কোন প্রশ্নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালত তার মতামত বা উপদেশ বা পরামর্শ প্রদান করতে পারবে। [জাতিসংঘ সনদ, অনুচ্ছেদ-৯৬(২)]

অর্থাৎ আন্তর্জাতিক আদালতের নিকট পরামর্শ চাইতে পারে-

(১) সাধারণ পরিষদ,

(২) নিরাপত্তা পরিষদ এবং

(৩) সাধারণ পরিষদের সুপারিশক্রমে জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য সংস্থা৷

আন্তর্জাতিক আদালতের উপদেশমূলক অভিমতের আইনগত মর্যাদাঃ সাধারণ পরিষদ বা নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক প্রেরিত আইনগত কোন প্রশ্নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালত তার মতামত বা উপদেশ বা পরামর্শ প্রদান করতে পারবে। [জাতিসংঘ সনদ, অনুচ্ছেদ-৯৬ (২)]

এছাড়া সাধারণ পরিষদের সুপারিশক্রমে জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য সংস্থাকে পরামর্শ প্রদান করতে পারে। এই ধরনের ক্ষমতাকে উপদেশমূলক ক্ষমতা বা এখতিয়ার বলে।

তবে আন্তর্জাতিক আদালতের এই সকল পরামর্শ কোন সংস্থার জন্য বাধ্যকর নয়।

আন্তর্জাতিক আদালতের সুপারিশ একদিকে উপদেশ অন্যদিকে বিচারবিভাগীয় ঘোষণা। সেই হিসেবে উক্ত উপদেশ গুরুত্বহীন নয়। বরং এর আইনগত মর্যাদা আছে।

উপসংহারঃ আন্তর্জাতিক আদালত জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এই আদালতের উপদেশ কারো জন্য বাধ্যতামূলক না হলেও এর বিচারের রায় বাধ্যকর। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক