আপোষযোগ্য ও আপোষ অযোগ্য অপরাধের মধ্যে পার্থক্য [Distinction between compoundable and non-compoundable offence.]: আপোষযোগ্য ও আপোষ অযোগ্য অপরাধের মধ্যে নিম্নোক্ত পার্থক্যগুলি বিদ্যমান-
১. আপোষযোগ্য অপরাধ বলতে ঐ সকল অপরাধকে বুঝায় যেগুলি ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪৫ ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী আদালতের অনুমতি ব্যতিরেকেই বৈধ উপায়ে আপোষ করা যায় এবং যেগুলি একই ধারার (২) উপধারা অনুসারে আদালতের অনুমতি নিয়ে আপোষ করা যায়৷
পক্ষান্তরে, ৩৪৫ ধারায় বর্ণিত অপরাধসমূহ ব্যতিরেকে অন্যান্য অপরাধগুলিকে আপোষ অযোগ্য অপরাধ বলা হয়।
২. মাত্রার বিবেচনায় আপোষযোগ্য অপরাধগুলি তুলনামূলকভাবে লঘুতর এবং আপোষ অযোগ্য অপরাধগুলি তুলনামূলকভাবে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
৩. বাদীপক্ষ ইচ্ছা করলেই আপোষযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে আপোষ করে আপোষনামা আদালতে পেশ করতে পারে। আদালত সেই মর্মে আদেশ দিতে পারেন। রায়ের পূর্বে যে কোন সময় এই আপোষনামা দাখিল করা যায় এবং এরূপ আপোষনামা গৃহীত হলে তা আসামীর খালাস হিসেবে বিবেচিত হবে।
অপরপক্ষে, আপোষ অযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগকারী ইচ্ছা করলেই আপোষ করতে পারে না, যেহেতু নরহত্যা, ডাকাতি, রাহাজানির মত অপরাধ সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে, সেহেতু এ সকল অপরাধীদের বিনা বিচারে যেতে দেয়া সমীচীন নয়। তাই এগুলি আপোষযোগ্য করা হয় নি, তবুও ক্ষেত্র বিশেষে আপোষের অনুমতি দেয়া হয়। যেমন, আবদুস সাত্তার বনাম রাষ্ট্র । (38 DLR 34 AD] বিশেষ অনুমতি নিয়ে যখন আপীল বিভাগে একটি চুরির মামলায় দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায় শাস্তির বিরুদ্ধে আপীল বিবেচনাধীন ছিল তখন অভিযোগকারী ও আসামীর মধ্যে একটা আপোষ করার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হলে অভিযোগকারী ও আসামীর মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে আপোষের অনুমতি দেয়া হয়। 531 মোটামুটি এভাবেই আপোষযোগ্য এবং আপোষ অযোগ্য অপরাধের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ