ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের প্রতিকার কী? কোন কোন কর্ম ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে না?


প্রশ্নঃ ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের প্রতিকার কী? কোন্ কোন্ কর্ম ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে না?

What are the remedies for breach of contract? What acts do not amount to a breach of Trade Mark?

ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের প্রতিকারঃ ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের জন্য দেওয়ানি প্রতিকার, ফৌজদারি প্রতিকার ও প্রশাসনিক প্রতিকার আছে। এগুলো যুগপৎভাবে চলতে পারে বা স্বতন্ত্রভাবেও পাওয়া যেতে পারে৷

দেওয়ানি প্রতিকারঃ দেওয়ানি প্রতিকারের জন্য জেলা জজের অধঃস্তন কোনো আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে না। অর্থাৎ জেলা জজ আদালত বা হাইকোর্ট বিভাগে মামলা দায়ের করা যাবে (ধারা ৯৬)। নিম্নোক্ত কারণে এ আদালতে মামলা করা যাবে-
(ক) কোনো নিবন্ধিত ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন; 
(খ) নিবন্ধিত ট্রেডমার্ক সংশ্লিষ্ট কোনো অধিকার; 
(গ) নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের সংশোধিত কোনো অধিকার; এবং 
(ঘ) সাদৃশ্যপূৰ্ণ বা প্রতারণামূলকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ কোনো ট্রেডমার্ক।

৯৭ ধারায় বলা হয়েছে এগুলো প্রতিকার নিম্নরূপঃ
• নিষেধাজ্ঞা 
• আর্থিক ক্ষতিপূরণ 
• মুনাফার অংশ প্রদান। 
এছাড়া ব্যবহৃত লেবেল ও মার্কসমূহ বিনষ্ট করার আদেশও দেওয়া যায়।

ফৌজদারি প্রতিকারঃ মিথ্যা ট্রেডমার্ক বা ট্রেড বর্ণনাযুক্ত পণ্য বিক্রয়ের জন্য ৭৪ ধারা অনুয়ায়ী ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার হতে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী সময়ে একই দোষে দোষী সাব্যস্ত হলে ১ বছর হতে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১ লক্ষ হতে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। তবে এরূপ শাস্তি হতে অব্যাহত পেতে পারেন যদি তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি যুক্তিসংগত সাবধানতা অবলম্বন করেছিলেন কিংবা তিনি উক্ত পণ্য যার নিকট হতে লাভ করেছেন তার সম্পর্কে অভিযোগকারীকে অবহিত করেছিলেন; অথবা তিনি সরল বিশ্বাসে কাজ করেছেন।

৮৩ ধারার বিধান মতে একমাত্র মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের বিচার করবেন। ৮৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, অপরাধ সংঘটিত হবার ৩ বছরের মধ্যে অথবা বাদী কর্তৃক তথ্য উদ্‌ঘাটিত হবার ২ বছরের মধ্যে প্রথমে যা ঘটে, অভিযোগ করতে হবে।

প্রশাসনিক প্রতিকারঃ কোনো নকল ট্রেডমার্ক বা প্রশাসনিক কোনো সমস্যার বিষয়ে নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের স্বত্বাধিকারী নিবন্ধকের নিকট প্রতিকারের জন্য আবেদন করতে পারেন। ৯১ ধারায় নিবন্ধনের কার্যপদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। পক্ষগণকে শুনানির সুযোগ দিয়ে, সাক্ষীদের শপথ গ্রহণপূর্বক সাক্ষ্য গ্রহণ করে নিবন্ধক যেরূপ যুক্তিসংগত বিবেচনা করবেন, সেরূপ আদেশ প্রদান করতে পারবেন এবং উক্তরূপ আদেশ দেওয়ানি আদালতের ডিক্রীর ন্যায় কার্যকর হবে। [ধারা ৯১ (৪)]

আপিলঃ ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকলে এ আইনের অধীনে নিবন্ধক কোনো আদেশ বা সিদ্ধান্ত প্রদান করলে তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ব্যক্তি হাইকোর্টে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আপিল করতে পারবেন [(ধারা ১০০ (৪)]। এক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

ট্রেডমার্ক লঙ্ঘিত হয় না এমন কর্মঃ কোনো কোনো কার্যাবলি নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের লঙ্ঘন হয় না তা ট্রেডমার্ক আইনের ২৭ ধারায় বিবৃত হয়েছে। এগুলো নিম্নরূপ-

১. কোনো শর্তসাপেক্ষে ট্রেডমার্ক নিবন্ধিত হলে, এমন কোনো স্থান বা পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট পণ্য বিক্রয় বা সেবা প্রদান করা যাতে উক্ত রূপ শর্ত বা সীমাবদ্ধতা প্রযোজ্য হয় না;

২. ট্রেডমার্কের সত্বাধিকারী বা নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর সহিত সংশ্লিষ্ট পণ্য বা সেবার ব্যবসায় সম্পর্কিত কোনো ব্যাক্তি কর্তৃক কোনো পণ্য বা সেবা প্রদানের অনুমতিপ্রাপ্ত হয়ে এবং এবং এরই আওতার মধ্যে থেকে উক্ত রূপে ট্রেডমার্ক ব্যবহার করা;

৩. ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের ফলে অর্জিত অধিকার লঙ্ঘন না করে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক এমন কোনো পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে উক্ত ট্রেডমার্ক ব্যবহার করা;

৪. অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এরূপ দু বা ততোধিক অভিন্ন বা সাদৃশ্যপূর্ণ বা প্রায় সাদৃশ্যপূর্ণ নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের ক্ষেত্রে, যেকোনো একটি ব্যবহার করা;

৫. যেক্ষেত্রে নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের স্বত্বাধিকারী অন্যের নিকট তার অধিকার হস্তান্তর করে, সেক্ষেত্রে উক্ত অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা তার মাধ্যমে দাবিদার ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত পণ্য বিক্রয় বা সেবা প্রদান করলে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘিত হবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক