রাজনৈতিক আশ্রয়দান কাকে বলে? আইনের কোন নীতির উপর ভিত্তি করে আশ্রয়দান অনুমোদন লাভ করে?


প্রশ্নঃ রাজনৈতিক আশ্রয়দান কাকে বলে? আইনের কোন নীতির উপর ভিত্তি করে আশ্রয়দান অনুমোদন লাভ করে?

ভূমিকাঃ প্রত্যেক মানুষের আইনের আশ্রয় লাভ করার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। একজন মানুষ দেশের বাইরেও আইনের আশ্রয় লাভ করতে পারে। নিজ দেশে যদি কেউ নিজেকে নিরাপদহীন মনে করে তাহনে তিনি অন্য দেশে প্রবেশ করার বা বসবাস করার অধিকার লাভ করতে পারেন।

রাজনৈতিক আশ্রয়দান (Political Asylum) কাকে বলে : অনেক সময় কোন ব্যক্তি তার নিজ দেশে বসবাস করতে পারেন না। অর্থাৎ নিজের দেশে বসবাস করা তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিভিন্ন কারণে এমনটি হতে পারে।

কোন ব্যক্তি যদি রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতার কারণে তার নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হন তাহলে তিনি অন্য কোন দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করলে এবং সেই দেশ তা অনুমোদন করলে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয়দান বলে।

আইনের কোন নীতির উপর ভিত্তি করে আশ্রয়দান অনুমোদন লাভ করে : আইনের যে নীতির উপর ভিত্তি করে আশ্রয়দান অনুমোদন লাভ করে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

(১) নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার নীতি : নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের কারণে কোন ব্যক্তি অন্য দেশে আশ্রয় পেতে পারেন। এক দেশ কোন ব্যক্তিকে আশ্রয়া প্ৰদান করলে অন্য দেশও তাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

(২) অরাজনৈতিক কাজ না হওয়া : রাষ্ট্রীয় অরাজনৈতিক কোন কাজের জন্য কোন ব্যক্তি অভিযুক্ত হলে তার জন্য এই আইন প্রযোজ্য হবে না।

(৩) জাতিসংঘের নীতিবিরুদ্ধ কাজ না হওয়া : জাতিসংঘের নীতিবিরুদ্ধ কোন কাজের জন্য কোন ব্যক্তি অভিযুক্ত হলে তার জন্য এই আইন প্রযোজ্য হবে না।

(৪) শরণার্থী মর্যাদা নীতি : কোন রাষ্ট্র শরণার্থীদের রাষ্ট্রের এমন সীমানায় পাঠাবে না যেখানে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ, জাতীয়তা, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদির কারণে তাদের জীবন হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। [শরণার্থী মর্যাদা সম্পর্কিত কনভেনশন, অনুচ্ছেদ-৩৩]

(৫) সার্বজনীন মানবাধিকার নীতি : নির্যাতন এড়ানোর জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির অন্য রাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনা করার এবং ভোগ করার অধিকার রয়েছে। [সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র, অনুচ্ছেদ-১৪(এ)

উপসংহারঃ প্রত্যেক মানুষেরই অধিকার আছে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার। কোন ব্যক্তি যদি প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে নির্যাতনের আশংকা করে তাহলে তিনি অন্য দেশে আশ্রয়লাভের আবেদন করতে পারেন। আবার কোন ব্যক্তি গুরুতর অপরাধ করে অন্য দেশে পালিয়ে থাকবে তাও আইনের পরিপন্থি কারণ সেক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ব্যক্তি বা তার পরিবার বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন। এজন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রত্যার্পণ বা বহিঃসমার্পণ চুক্তি হয়ে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক