প্রশ্নঃ অবৈধ বাধাদানও বেআইনী আটকের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
অবৈধ বাধাদানও বেআইনী আটকের মধ্যে পার্থক্যঃ বে-আইনী বাধাদান ও বেআইনী আটকের মধ্যে নিম্নলিখিত পার্থক্যগুলি পরিলক্ষিত হয়-
১. বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৩৯ ধারায় বলা হয়েছে যে, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য কোন ব্যক্তিকে এমন কোন দিকে চলাফেরা করতে বা অগ্রসর হতে বাধা দান করে যে দিকে ঐ ব্যক্তির চলাফেরা করার বা যাবার অধিকার রয়েছে, তাহলে সে ঐ ব্যক্তিকে বেআইনীভাবে বাধাদান করেছে বলে গণ্য হবে।
দণ্ডবিধির ৩৪০ ধারা মতে, যে ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যাবার ব্যাপারে অন্যায়ভাবে বাধাদান করে তাহলে সে ব্যক্তি উক্ত ব্যক্তিকে বেআইনী ভাবে আটক করেছে বলে গণ্য হবে।
২. অবৈধ বাধাদানের উপাদান নিম্নরূপ-
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক বাদীকে বাধা প্রদান, (খ) এরূপ বাধাদানের ফলে বাদীর যেদিকে যাবার অধিকার রয়েছে সে অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে। (গ) অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এরূপ কাজ করেছে।
অবৈধ আটকের উপাদান-
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি বাদীকে আটক করেছিল, (খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এ কাজ করেছিল, (গ) এরূপ আটকের ফলে বাদী একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে গমন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। (ঘ) এরূপ বাধা প্রদান আইনের দৃষ্টিতে অন্যায়।
৩. বেআইনী বাধাদানের ক্ষেত্রে বাদীকে একটি বিশেষ দিকে চলাফেরার ব্যাপারে বাধা দেয়া হয়, কিন্তু বেআইনী আটকের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে সব দিকে চলাফেরায় বাধা দেয়া হয়।
৪. ক, খ কে একটি নির্দিষ্ট রাস্তায় যেতে বাধা দেয় যে রাস্তায় চলাচল করার অধিকার খ এর রয়েছে। এক্ষেত্রে ক অবৈধ বাধাদানের জন্য দোষী হবে।
কিন্তু ক যদি খ কে একটি ঘরে আবদ্ধ রাখে এবং সে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে তার চলাফেরা সীমাবদ্ধ রাখে তাহলে ক অবৈধ আটকের দোষে দোষী সাব্যস্ত হবে।
৫. অবৈধ বাধাদানের জন্য ১ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ শত টাকা জরিমানা কিংবা উভয় প্রকার দণ্ড হতে পারে। অবৈধ আটকের জন্য ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় প্রকার দণ্ড হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ