আদিম সমাজ কাকে বলে?


প্রশ্নঃ আদিম সমাজ কাকে বলে?
অথবা, আদিম সমাজ কী?

ভূমিকাঃ মহাকালের প্রবহমানতার প্রেক্ষিতে মানবসমাজ সতত পরিবর্তিত ও বিকশিত হচ্ছে। সমাজের এ পরিবর্তন ও বিকাশ তার সহজাত ধর্ম। বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে মানবসমাজ আধুনিক জটিল শিল্প সমাজে এসে উপনীত হয়েছে। মানবসমাজ বিকাশের সর্বপ্রথম স্তর হলো আদিম সমাজ।

আদিম সমাজের সংজ্ঞাঃ আদিম সমাজের সংজ্ঞা দেয়ার আগে আদিম তথা 'Primitive' শব্দটি একটু বিশ্লেষণ করা দরকার।

‘আদিম'-এর শাব্দিক বিশ্লেষণঃ আদিম শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Primitive। সাধারণভাবে শব্দটি নিকৃষ্ট কিংবা সাদাসিধে ধরনের একটা কিছু বুঝাতে ব্যবহার করা হয়৷ মানবসমাজ বিকাশের সর্বপ্রথম স্তর বুঝাতে নৃ-বিজ্ঞানীরা ‘আদিম' শব্দটি ব্যবহার করেন। কিন্তু আধুনিক নৃ-বিজ্ঞানীরা সে সমাজ বুঝাতে ‘আদিম' শব্দটি ব্যবহার করতে চান না। এর পরিবর্তে তারা 'Pre-Industrial Society' কিংবা 'Illiterate Society' বলার মতামত ব্যক্ত করেন। বর্তমানে আদিম সমাজের পরিবর্তে 'Illiterate Society' তথা অনক্ষর সমাজ ব্যবহৃত হচ্ছে।

আদিম বা অনক্ষর সমাজঃ অনক্ষর শব্দের অর্থ হলো অক্ষরজ্ঞানের অভাব। অর্থাৎ যে সমাজের মানুষের মধ্যে অক্ষরজ্ঞান ছিল না, সে সমাজকে অনক্ষর সমাজ বলা হয়। প্রাক ঐতিহাসিক যুগে যে সমাজে কোনো অক্ষর জ্ঞানের উদ্ভব হয়নি, যাদের লিখিত কোনো ভাষা নেই, যাদের একটি স্বতন্ত্র সংস্কৃতি ও জীবনবোধ গড়ে ওঠেছিল সেই সমাজকে আদিম সমাজ তথা অনক্ষর সমাজ বলা হয়।

অন্যভাবেও আমরা বলতে পারি, যতদিন পর্যন্ত মানুষের মধ্যে কোনো লিখিত ভাষা তৈরি হয়নি, যতদিন মানুষ প্রকৃতির ছত্রচ্ছায়ায় সংগ্রাম করে টিকে থেকেছে; যে সমাজে ব্যক্তিগত সম্পত্তির কোনো ধারণা গড়ে ওঠেনি, সেই সমাজকে অনক্ষর সমাজ বলা হয়। মূলত সভ্যতার উন্মেষ ঘটেনি বা সভ্যতার সংস্পর্শে আসেনি এমন সমাজকে অনক্ষর সমাজ বলা হয়।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধাপে আদিম সমাজের বিবর্তন একটা অন্যতম ধারা। যার মধ্যেদিয়ে মানুষ পরবর্তী স্তরগুলো অতিক্রম করে। এ স্তরের বিভিন্ন সমাজের মধ্যে মানুষের ধী-বুদ্ধির বিকাশ ঘটে। মানুষ পরিবর্তনমুখী হয়। চিন্তা-চেতনায়, মননশীলতায় পরিবর্তনের রূপটি সমাজের পরবর্তী স্তরকে বিকশিত করতে সাহায্য করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক