কোন কোন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত বা কূটনৈতিককে অবাঞ্ছিত ঘােষণা করতে পারে?


প্রশ্নঃ কোন কোন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত বা কূটনৈতিককে অবাঞ্ছিত ঘােষণা করতে পারে?

ভূমিকাঃ প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের তাদের নিজেদের প্রয়ােজনে অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যােগাযােগ স্থাপন করতে হয় বা সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়। এই সকল যােগাযােগ বা সম্পর্ক বজায় রাখতে একটি দেশ বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি নিয়ােগ করে। এরা হলেন কূটনৈতিক প্রতিনিধি। কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা বিশেষ সুবিধা ও অধিকার ভােগ করেন।

কূটনৈতিক আইন (Diplomatic Law) কাকে বলেঃ
১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশনের মাধ্যমে কূটনৈতিক আইন বিধিবদ্ধ হয়। প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের তাদের নিজেদের প্রয়ােজনে অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যােগাযােগ স্থাপন করতে হয় বা সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়। এই সকল যােগাযোেগ বা সম্পর্ক বজায় রাখতে একটি দেশ বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি নিয়ােগ করে। সুতরাং বলা যায়, যে আইন দ্বারা কূটনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করা হয় বা নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে কূটনৈতিক আইন (Diplomatic Law) বলে।

কূটনৈতিক দূত/প্রতিনিধি (Diplomatic envoys) কারাঃ
যে সকল ব্যক্তিবর্গ এক দেশের সাথে অন্য দেশের সম্পর্ক ও যােগাযােগ স্থাপনের কাজে নিয়ােজিত থাকেন তাদেরকে কূটনৈতিক দূত বা কূটনৈতিক প্রতিনিধি বলে। ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্কিত কনভেনশনের ১(এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কূটনৈতিক প্রতিনিধি বলতে মিশন প্রধান বা মিশনের কর্মচারিবৃন্দকে বােঝায়।

(i) মিশন প্রধানঃ প্রেরক রাষ্ট্র মিশন প্রধান পদে কাজ করার জন্য যাকে দায়িত্ব দেন তিনি মিশন প্রধান হিসেবে গণ্য। যেমনঃ রাষ্ট্রদূত, হাই-কমিশনার।

(ii) মিশনের কর্মচারিবৃন্দঃ মিশন প্রধান ছাড়া যে সকল ব্যক্তিবৃন্দ কূটনৈতিক মর্যাদায় কাজ করেন তারা মিশনের কর্মচারি হিসেবে গণ্য। যেমনঃ সেক্রেটারি, কাউন্সিলর, বিভিন্ন এটাচী ইত্যাদি।

কোন কোন পরিস্থিতিতে একটি রাষ্ট্র একজন কূটনৈতিককে/দূতকে অবাঞ্ছিত ঘােষণা করতে বা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেঃ
নিম্নোক্ত কারণে কোন গ্রাহক রাষ্ট্র কোন ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার / অবাঞ্চিত ঘােষণা করতে পারে-

(১) সৎ চরিত্রবান না হলেঃ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি সৎ চরিত্রের অধিকারী না হন তাহলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারে।

(২) সাবেক নাগরিক হলেঃ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি গ্রাহক রাষ্ট্রের সাবেক নাগরিক হয় তাহলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারে।

(৩) বিরূপ মনােভাবে অধিকারী হলেঃ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি কোন ঘােষণা বা বিবৃতি দ্বারা গ্রাহক রাষ্ট্রের জনগণের বিরুদ্ধে বা সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিরূপ মনােভাব প্রকাশ করে তাহলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারে।

উপসংহারঃ কূটনৈতিক মিশনে কূটনৈতিক প্রতিনিধি যেমন থাকেন তেমনি অ-কূটনৈতিক প্রতিনিধিও থাকেন। যেমনঃ প্রশাসনিক ও কারিগরি কাজে নিয়ােজিত হিসাবরক্ষক, মুদ্রাক্ষরিক, অনুবাদক, প্রশাসনিক সহকারি ইত্যাদি। এছাড়া সেবক হিসেবে গণ্য পিওন, ড্রাইভার, লিফটম্যান, দারােয়ান ইত্যাদিও অ-কূটনৈতিক মর্যাদার কর্মচারি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক