হিসাব ছক কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ বর্ণনা কর


প্রশ্নঃ হিসাব ছক কত প্রকার? উদাহরণসহ বর্ণনা কর।

১.২৭ হিসাবের ছক
Form of Account

হিসাবের ছকঃ লেনদেনের শ্রেণিভিত্তিক তথ্যসমূহ তারিখের ক্রমানুসারে হিসাবে সাজানাে থাকে। সুষ্ঠু ও সঠিক পদ্ধতিতে যে নির্দিষ্ট কাঠামাে বা ছক ব্যবহার করা হয় তাকে হিসাবের ছক বলে। হিসাবের ছক বা কাঠামাে সাধারণত দু ধরনের হয়ে থাকে। যথা- (i) সনাতন ছক বা T ছক (ii) আধুনিক ছক বা চলমান জের ছক।

সনাতন ছক বা প্রচলিত ছক বা T-হিসাব ছক (T-Format): দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি আবিষ্কারের পর থেকেই হিসাবে প্রচলিত ছক বা T ছকের ব্যবহার হয়ে আসছে। ইংরেজি অক্ষর 'T' এর মতে, আকৃতি বলে একে T ছক বলা হয়। এই হিসাব কাঠামােকে প্রথমতঃ একটি লম্বালম্বি রেখা টেনে সমান দু'ভাগে ভাগ করা হয়। এর বাম দিককে বলা হয় ডেবিট দিক এবং ডান দিককে বলা হয় ক্রেডিট দিক। এর পর প্রতিটি দিকে আবার তারিখ, বিবরণ, জাবেদা পৃষ্ঠা নম্বর এবং টাকার অঙ্ক বসানাের জন্যে ৪টি কলাম/ ঘর তৈরি করা হয়। সুতরাং ডেবিট ও ক্রেডিট উভয় দিকের জন্যে ৪টি করে মােট ৮টি ঘর তৈরি করা হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর এর ডেবিট দিক ও ক্রেডিট দিকের যােগফলের পার্থক্য নির্ণয় করে হিসাবের জের/উদ্বৃত্ত (Balance) বের করা হয়।


হিসাবের কলাম/ঘরসমূহঃ
i. তারিখ (Date): সমজাতীয় হিসাব পক্ষসমূহ তারিখ অনুযায়ী হিসাবে লিপিবদ্ধ করা হয়।

ii. বিবরণ (Particular): লেনদেনের সাথে জড়িত আরেকটি হিসাব পক্ষকে/লেনদেনের সংক্ষিপ্ত বিবরণকে এ ঘরে লিখতে হয়।

iii. জাবেদা পৃষ্ঠা (Journal Folio): প্রাথমিকভাবে লেনদেনটি জাবেদার কত পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ হয়েছে তা এ ঘরে লিখা হয়।

iv. টাকার অংক (Amount in taka): সর্বশেষে টাকার অঙ্ক এ ঘরে লিখতে হয়।

বাণিজ্যিকে প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহারের পূর্বে T-আকৃতির ছকই ছিল হিসাবের একমাত্র বহুল ব্যবহৃত হক। অর্থাৎ হাতে কলমে (Manually) হিসাব রাখা হলে হিসাবের জন্যের T-আকৃতি ছকই সাধারণতঃ ব্যবহৃত হয়।

আধুনিক ছক বা চলমান জের ছক (Modern/Continuous Balance format): T ছকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর হিসাবের উদ্বৃত্ত নির্ণয় করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হিসাব নিকাশের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে হিসাবের ছকেও পরিবর্তন এসেছে। কম্পিউটারাইজড হিসাব ব্যবস্থায় হিসাবের ডেবিট, ক্রেডিট ও উদ্বৃত্ত ঘর পাশাপাশি রাখা হয়। এতে সমজাতীয় হিসাব পক্ষসমূহকে হ্রাস-বৃদ্ধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট হিসাবে ডেবিট বা ক্রেডিট দিকে লিপিবদ্ধ করার পর পরই উক্ত হিসাবের উদ্বৃত্ত বা জের বের করা হয়। এজন্য একে চলমান জের ছক বলা হয়।

চলমান জের হিসাব ছকে তারিখ, বিবরণ, জাবেদা পৃষ্ঠা, ডেবিট টাকার ঘর, ক্রেডিট টাকার ঘর ও উদ্বৃত্তের জন্যে মােট ৬টি বা ৭টি ঘর থাকে। অর্থাৎ এতে টাকার কলাম তিনটি বা চারটি ও থাকতে পারে। যদি টাকায় ঘর তিনটি থাকে তাহলে একে তিন কলাম খতিয়ান বলা হয়। আবার টাকার ঘর যদি চারটি থাকে তাহলে একে চার কলাম খতিয়ান ও বলা হয়। নিম্নে তিন কলাম এবং চার কলাম বিশিষ্ট হিসাবের ছক দেখানাে হলাে-

উদাহরণ: নিম্নলিখিত লেনদেনসমূহ প্রাপ্য হিসাবে হিসাবভুক্ত করে দেখানাে হলঃ
জানু-১ প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত ২০,০০০ টাকা।
১০- ধারে পণ্য বিক্রয় করা হল ৫০,০০০ টাকা।
২৫-দেনাদারের কাছ থেকে নগদ পাওয়া গেল ২৫০০০ টাকা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক