অথবা, ফলিত নৃবিজ্ঞান পাঠের তাৎপর্য বর্ণনা কর।
ভূমিকাঃ নৃবিজ্ঞানের ব্যবহারিক মূল্য সম্পর্কিত বিজ্ঞান হচ্ছে ফলিত নৃবিজ্ঞান। সাধারণত কোন সামাজিক সমস্যাকে ঘিরে সৃষ্ট নৃতাত্ত্বিক মতবাদের যথার্থতা যাচাই বা মানব কল্যাণের জন্য কোন সমস্যার প্রকৃতি পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে সমাধানের পথ নির্দেশ করে থাকে।
ফলিত নৃবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব/প্রয়ােজনীয়তাঃ বর্তমান আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগেও ফলিত নৃবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব/প্রয়ােজনীতা অপরিসীম। নিম্নে ফলিত নৃবিজ্ঞানের গুরুত্ব ও প্রয়ােজনীয়তা আলােচনা করা হল-
(১) মানুষ সম্পর্কে জ্ঞান লাভঃ নৃবিজ্ঞান পাঠে মানুষ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। নৃবিজ্ঞান মানুষের জৈবিক ও সাংস্কৃতিক উভয় দিক নিয়ে আলােচনা করে। সে কারণে নৃবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।
(২) প্রশাসনিক কাজকর্মঃ নৃবিজ্ঞানী তার গবেষণা দ্বারা সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে যে জ্ঞান অর্জন করেন তাতে তার পক্ষে প্রশাসনিক কাজকর্ম করা একদিকে যেমন সহজ হয়, অন্যদিকে প্রশাসনিক উন্নতি আনার জন্য কার্যকরী সুপারিশ করা সহজ হয়।
(৩) অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জানাঃ কোন দেশের উৎপাদন, বন্টন, ভােগ, সঞ্চয় প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে ও জানতে নৃবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা নৃবিজ্ঞান মানুষের অর্থনৈতিক সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে আলােচনা করে।
(৪) রাজনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণঃ মানব সমাজ থেকে কিভাবে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দিতা দূর করা যায়, কীভাবে দেশের উন্নয়নের গতিকে তরান্বিত করা যায়, রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট্য, ক্ষমতার উৎস, নেতত্বের কাঠামাে, দলনেতার ভূমিকা ইত্যাদি নৃবিজ্ঞান অধ্যয়নে জানা যায়।
(৫) উপজাতি সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানঃ বর্তমান পৃথিবীতে ক্ষুদ্র জাতি গােষ্ঠীর লােকজন নানা সমস্যায় জর্জরিত। একজন নৃবিজ্ঞানী ক্ষুদ্র জাতি গােষ্ঠীর সমস্যাবলি অতি সহজেই চিহ্নিত করে সমাধানের পথ নির্দেশ করতে পারেন। তাই নৃবিজ্ঞান পাঠ করা আবশ্যক।
(৬) সমাজ কাঠামাে পাঠঃ নৃবিজ্ঞানী বিশেষ করে সামাজিক নৃবিজ্ঞানী ক্ষুদ্রাকৃতির, সমাজ সম্পর্কে নিবিড় গবেষণা শেষে সেখানকার সমাজ কাঠামাের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারেন।
পরিশেষঃ উপরিউক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিচার বিশ্লেষণে বলতে পারি যে, আধুনিক ফলিত নৃবিজ্ঞানী, আর্থসামাজিক প্রশাসনিক রাজনৈতিক প্রভৃতি সমস্যার মূল প্রকৃতি সম্পর্কে ব্যক্তিগত অংশগ্রহণ ও পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি প্রয়ােগে গবেষণা করেন।
0 মন্তব্যসমূহ