‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসে ভিক্টোরিয়া পার্কে ছাত্রদের মিটিং এর মূল বক্তব্য কী ছিল?


প্রশ্নঃ ভিক্টোরিয়া পার্কে ছাত্রদের মিটিং এর মূল বক্তব্য কী ছিল?

উত্তরঃ ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ের প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে ‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসটি। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দুই বছর আগে বিপুল গণঅসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে সারা দেশে আইয়ুব বিরােধী মিছিল আর মিটিং এ ফেটে পড়ে। এরই অংশ হিসেবে ‘৬৯-এ আয়ুববিরােধী আন্দোলনে ভিক্টোরিয়া পার্কে ছাত্রলীগের মিটিং হয়।

মিটিং এ বক্তারা বলেন, তেইশ বছর থেকে সােনার বাংলার সম্পদে ফুলে উঠেছে পশ্চিম পাকিস্তান। বাংলাকে শােষণ করে গড়ে তােলা হয় করাচি, লাহাের, ইসলামাবাদ। পশ্চিম পাকিস্তানের মরুভূমিতে খাল কেটে আজ ফসল ফলানাে হচ্ছে। সেসব বাংলার টাকা। অথচ আমাদের বন্যা সমস্যার কোনাে সমাধান হয় না। আমাদের কৃষক পাটের দাম পায় না, আমাদের এখানকার কাগজ ছাত্রসমাজকে কিনতে হয় চড়া দামে। বাঙালি বলে ভালাে চাকরি থেকে বঞ্চিত। অধিকার আদায়ের কথা বললে তাকে কারাবদ্ধ করা হয়, মিথ্যে ষড়যন্ত্রের মামলা চাপিয়ে তাকে নিঃশেষ করে দেওয়া হয়। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি পাকিস্তানে তাদের পা-চাটা দালাল আইয়ুব খান ও তার চেলামুন্ডাদের দিয়ে এদেশের মানুষকে শােষণ করে চলেছে। এদেশের সাধারণ মানুষের পেটে আজ ভাত নেই, পরনে কাপড় নেই। অথচ সর্বহারা মানুষের শ্রমে উপার্জিত টাকায় কিছু মানুষ প্রতিদিন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। ঋণ ও সাহায্য নেওয়ার নাম করে সাম্রাজ্যবাদের পােষা কুকুর আইয়ুব খান দেশকে, দেশের মানুষকে বন্ধক দিয়ে রেখেছে বিদেশি প্রভুর কাছে। আজ বিশ্বের সর্বত্র এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকায় সর্বহারা মানুষ জেগে উঠেছে। আপনারাও জেগে উঠুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক