উত্তরঃ আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলা কথাসাহিত্যে এক অনন্যসাধারণ প্রতিভার নাম। ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি গাইবান্ধার গােটিয়া গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃনিবাস বগুড়া শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত নারুলি গ্রামে। তার পিতার নাম বি.এম. ইলিয়াস এবং মাতার নাম মরিয়ম ইলিয়াস। তার পিতৃদত্ত নাম আখতারুজ্জামান মােহাম্মদ ইলিয়াস। প্রথমে বগুড়ায় ও পরে ঢাকায় তার শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন সরকারি কলেজের বাংলা বিষয়ের অধ্যাপক। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি লেখার সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর কখনাে জোর দেননি। বরং গুরুত্ব দিয়েছেন লেখার গুণগত মানের ওপর। জীবন ও জগৎকে তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন গভীর অন্তদৃষ্টি সহযােগে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, দারিদ্র্য, শােষণ, বঞ্চনা প্রভৃতি বিষয়কে করেছেন সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত। মানুষের জীবনকে সামগ্রিকভাবে অনুধাবন করতে চেয়েছেন এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিতেই। মানুষের পরম সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক প্রান্তসমূহ উন্মােচনেও তার রয়েছে গভীর দক্ষতা।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস পাঁচটি ছােটোগল্প গ্রন্থে সংকলিত আছে মাত্র ২৮টি গল্প। এছাড়া রয়েছে ২টি উপন্যাস ও ১টি প্রবন্ধসংকলন। তার গল্পগ্রন্থের নাম- ‘অন্য ঘরে অন্য স্বর’, ‘খােয়ারি’, ‘দুধভাতে উৎপাত’, ‘দোজখের ওম’, ‘জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল। উপন্যাস দুটি হলাে- ‘চিলেকোঠার সেপাই’ ও ‘খােয়াবনামা'। ১৯৯৭ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
0 মন্তব্যসমূহ