অথবা, কাদের মিঞার পরিণতি ব্যাখ্যা কর।
অথবা, কাদের মিঞা যুবক শিক্ষককে কী ভয় দেখিয়েছিল?
উত্তরঃ লালসালু উপন্যাসে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ধড়িবাজ ও ধর্ম ব্যবসায়ী মজিদের অসৎ ও বিবেকহীন জীবনের স্বরূপ উদঘাটন করেন; অন্যদিকে ‘চাঁদের অমাবস্যা’তে তিনি ভিন্নতর ভঙ্গিতে কপট জীবনের স্বরূপ ফুটিয়ে তুলেছেন দরবেশ বলে পরিচিতি ‘কাদের’ চরিত্রের মধ্যে।
বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও শুধু আপন কাম লালসা চরিতার্থ করার পর কাদের করিম মাঝির যুবতী স্ত্রীকে হত্যা করে। কাদের মিঞা চেয়েছিল ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে, বড়বাড়ির সম্মান, তার ফাঁসির কথা বলে আরেফ আলীর মুখ বন্ধ করবে কিন্তু সে তা করতে ব্যর্থ হয়। কাদের তাকে হুমকি দেয় এই মামলায় আরেফ আলীর ফাঁসি হতে পারে। কাদের তাকে প্রশ্ন করেছিল সে মেয়েলােকটিকে চেনে কি না? আরেফ আলী বলেছিল না। তখন কাদের বলেছিল, ‘সে বেঁচে নাই বা কীভাবে মরেছে, তাতে আপনার কি?' এসব কিছু যুবক শিক্ষককে সত্য বলা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। অথচ আত্মীয়-স্বজন, ধর্ম-সমাজ ও আইনের রক্ষকদের বশীভূত ও হাত করে হত্যার সমস্ত দায়ভার সে চাপিয়ে দেয় হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী, নিরীহ স্কুল শিক্ষক আরেফ আলীর ওপর।
শাস্তির দায় এড়িয়ে সসম্মানে দরবেশ হিসেবে সে বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকে। অন্তত ইঙ্গিতময় বর্ণনার মধ্য দিয়ে ওয়ালীউল্লাহ স্বার্থান্বেষী মহলের এই কূটকৌশলকে প্রকাশ করেছেন। এবং তার মাধ্যমে আমাদের সমাজের ধর্ম ও আইনের অক্ষমতা ও অসারতা যে কতখানি তা স্পষ্ট করে তুলেছেন।
0 মন্তব্যসমূহ