হস্তান্তরযােগ্য দলিল আইন, ১৮৮১ (ধারা ১০)

 

হস্তান্তরযােগ্য দলিল আইন, ১৮৮১- ধারা ১০

ধারা-১০ঃ যথাকালে পরিশােধ (Payment in due course)—সদ্বিশ্বাসে এবং অবহেলা না করে দলিলের সুস্পষ্ট প্রতীয়মান মেয়াদ অনুযায়ী উক্ত দলিলের অধিকার-প্রাপ্ত ব্যক্তিকে যদি এরূপ অবস্থায় অর্থ পরিশোধ করা হয়, যাতে ঐ ব্যক্তি যে উক্ত দলিলের অর্থ পাবার অধিকারী নয় এরূপ বিশ্বাস করবার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে না, তাহলে উক্ত অর্থ পরিশােধকে বলা হয়। “যথাকালে পরিশােধ”।

আলােচনা

ধারার পরিধি (Scope): উপরে বর্ণিত সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয় যে, অর্থ প্রদানের সময় নিম্নলিখিত চারিটি শর্ত পালিত হলে উহাকে যথাকালে পরিশােধ বলা হবে, যেমন-
(১) সুস্পষ্ট প্রতীয়মান মেয়াদ অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে হবে;
(২) সদ্বিশ্বাসে এবং অবহেলা না করে অর্থ প্রদান করতে হবে;
(৩) দলিলের ধারককে অর্থ প্রদান করতে হবে; এবং
(৪) উক্ত ধারক যে দলিলে বর্ণিত অর্থ পাবার অধিকারী নহে এরূপ বিশ্বাস করবার কোন কারণ না থাকা নিশ্চিত করতে হবে।

অত্র ধারায় ব্যবহৃত সদ্বিশ্বাসে এবং অবহেলা না করে শব্দগুলাে দ্বারা মূলত সততাকেই নির্দেশ করা হয়েছে। অর্থাৎ সততার সাথে অর্থ পরিশােধ করলেই তা সরল বিশ্বাসে করা হয়েছে বলে গণ্য হবে [৮ ডিএলআর ২৪৫]। কোন দলিলের গ্রাহক বা স্বীকৃতিদাতা কোন দলিলের অর্থ যথানিয়মে পরিশােধ করলে তিনি দলিলের প্রকৃত স্বত্বাধিকারী হতে অব্যাহতি পাবেন। এমন কি যাকে অর্থ প্রদান করা হবে তিনি দলিলের প্রকৃত স্বত্বাধিকারী না হলেও তজ্জন্য উক্ত গ্রাহক বা স্বীকৃতিদাতা দায়ী থাকবেন না। আবার জাল চেকের টাকা পরিশােধ করলে তা যথাকালে পরিশােধ বলে গণ্য হবেনা এবং যে পক্ষের অবহেলার কারণে তা হয়েছে সে পক্ষই এর জন্য দায়ী হবেন (পিএলডি ১৯৭৫ করাচি ২৫২)। দলিলের টাকা দলিলের ধারক নয় এমন ব্যক্তিকে পরিশােধ করা হলে তা যথাকালে পরিশােধ বলে বিবেচিত হবেনা [এআইআর ১৯৬১ এপি ৩০১(ডিবি)]। ধারায় বর্ণিত উপায়ে ব্যাঙ্ক যদি যথাকালে অর্থ প্রদান করে থাকে তাহলে সে তার গ্রাহকের হিসাবে উক্ত অর্থ খরচ (debit) লিখতে পারে। পরে যদি দেখা যায়, চেকের ধারক অসৎ উপায়ে প্রাপ্ত চেকটি ব্যাঙ্কের নিকট হতে ভাঙ্গিয়ে নিয়েছে, তাহলে এর জন্য অর্থ প্রদানকারী ব্যাঙ্ক দায়ী হবেনা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক