ইচ্ছার স্বাধীনতা কী?


প্রশ্নঃ ইচ্ছার স্বাধীনতা কী?
অথবা, ইচ্ছার স্বাধীনতা কাকে বলে?
অথবা, Freedom of will কী?
অথবা, ইচ্ছার স্বাধীনতা বলতে কি বােঝায়?


ভূমিকাঃ দর্শনের ইতিহাসে ইচ্ছার স্বাধীনতা একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। এটি মানুষের ভাল মন্দ ন্যায় অন্যায় নিয়ে আলােচনা করে থাকে। তারপরও দর্শনের ইতিহাসে এ সমস্যাটি একটি জটিল সমস্যা। যেমন- অর্থনীতি, মনােবিজ্ঞান, নীতি বিদ্যা ইত্যাদি। এই সমস্ত বিষয়াদি থেকে প্রদত্ত মতবাদের আলােকে দার্শনিকরা ইচ্ছার স্বাধীনতার সমস্যাটিকে বিস্তৃতভাবে আলােচনা করেছেন।

ইচ্ছার স্বাধীনতাঃ ইচ্ছার স্বাধীনতা নৈতিক বিচারের একটি মূল সত্য। নৈতিক বিচারে আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তিকে স্বীকার করে নেওয়া হয়। এখানে ব্যক্তির ইচ্ছা ও কর্মের স্বাধীনতাও আছে। ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছা না থাকলে দায়িত্ব ও কর্তব্যের কোনাে প্রশ্নই ওঠে না। বিরােধ ও কামনার ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি উপলব্ধি করতে পারি। যে কোন দিকে কাজ করার ক্ষমতা আমাদের আছে। একটি কাজকে পরিত্যাগ করে অন্য একটি কাজ নির্বাচন করার ক্ষমতাও আমাদের আছে। ঐচ্ছিক ক্রিয়াই নৈতিক বিচারের বিষয়বস্তু। ঐচ্ছিক ক্রিয়ার মূল বিষয়বস্তু হলাে কর্মকর্তার আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা। কর্মকর্তা যদি তার স্বাধীন ইচ্ছা অনুসারে তার কর্ম নির্ধারণ করতে না পারে তবে কর্মের ফলাফলের জন্য তাকে দায়ী করা যায় না। স্বেচ্ছা প্রণােদিত হয়ে যে কর্ম সম্পাদন করে, সে কর্মের জন্যও সেই কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়। আর সেই কর্মকেই ভাল কি মন্দ তা বলা যায়। তাই ইচ্ছার স্বাধীনতাকে নৈতিক বিচারের স্বীকার্য সত্য বলে গণ্য করা যায়।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, ইচ্ছার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করলে নৈতিক বিচারে অর্থহীন হয়ে পড়ে। ইচ্ছার স্বাধীনতা না থাকলে নৈতিক জীবনের ভিত্তি ধ্বংস হয়ে পড়ে। সুতরাং ইচ্ছার স্বাধীনতা নৈতিক বিচারের একটি মূল সত্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক