নৈতিক বিবর্তনবাদ বলতে কি বুঝ?


প্রশ্নঃ নৈতিক বিবর্তনবাদ বলতে কি বুঝ?

ভূমিকাঃ বিবর্তন মানে হলাে পরিবর্তন। এই পরিবর্তনটি হলাে সুশৃঙ্খল। একটা ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সরল অবস্থা থেকে জটিল অবস্থার দিকে ধাবমান। নীতিবিদ্যায় নৈতিক বিবর্তনবাদ একটি আলােচিত মতবাদ। এটি নৈতিক সুখবাদের একটি অংশ। নৈতিক সুখবাদের দু’টো অংশ রয়েছে। যেমন- আত্মসুখবাদ ও পরসুখবাদ।

নৈতিক বিবর্তনবাদঃ নৈতিক বিবর্তনবাদের সমর্থকগণ হলেন হার্বাট স্পেন্সার, লেসলি ষ্টিফেন, স্যামুয়েল আলেকজান্ডার। এদের মধ্যে হার্বার্ট স্পেন্সরের মত সপ্রণিধানযােগ্য। তিনি নৈতিক বিবর্তনবাদ সম্পর্কে দুটি নীতির কথা বলেছেন, “যােগ্যতমের টিকে থাকা এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন”। তিনি মনে করেন যে, সমস্ত জীব ও প্রাণী তার পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে যত বেশি মানিয়ে নিতে পারবে তারা টিকে থাকবেন এবং যারা মানিয়ে নিতে পারবে না তার ধ্বংস হবেন। পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, কতক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে, আবার কতক সভ্যতা তাদের নিজস্ব শক্তি বলে টিকে আছে। কতক ভাষা ও সংস্কৃতি কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে। এসব কিছুই হলাে বিবর্তনের অংশ। তেমনিভাবে যে সকল ধারা বা সংস্কৃতি মানুষ ধরে রেখেছে তা সবই বিবর্তনের ফল।

নৈতিক বিবর্তনবাদ সম্পর্কে লেসলি স্টিফেন বলেন, জীবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যেমন সম্পর্ক রয়েছে সমাজের সাথে সমাজবদ্ধ ব্যক্তির ও তেমনি নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। ব্যক্তি যেহেতু সমাজেরই অংশ তাই সমাজের উন্নতির সাথে সাথে ব্যক্তির উন্নতি সম্ভব। তাই মানুষের এমনভাবে কাজ করতে হবে তা যেন সাথে সাথে সমাজের অন্যান্য মানুষের কল্যাণ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বিবর্তনবাদী মতবাদের ক্ষেত্রে নৈতিক বিবর্তনবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযােগ্য মতবাদ। মানুষ কখনাে বিবর্তনের বাইরে নয়। নানা ঘাত প্রতিঘাতের মাধ্যমে মানুষ এগিয়ে চলে। সুতরাং নৈতিক বিবর্তনের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক