মদিনা সনদ সম্বন্ধে যা জান লেখ, ইসলামের ইতিহাসে এর গুরুত্ব আলােচনা কর


প্রশ্নঃ মদিনা সনদের প্রধান শর্তাবলি উল্লেখপূর্বক এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
অথবা, মদিনা সনদের শর্তসমূহ আলােচনা কর। ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
অথবা, মদিনা সনদ সম্বন্ধে যা জান লেখ এবং ইসলামের ইতিহাসে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলােচনা কর।
অথবা, মদিনা সনদের শর্তাবলি বিশ্লেষণ কর। এ সনদের তাৎপর্য ও ফলাফল আলােচনা কর।

উপস্থাপনাঃ মদিনায় নবপ্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা, মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সম্মানজনক সহাবস্থান ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করতে মহানবী (স) ঐতিহাসিক মদিনা সনদ সম্পাদন করেন। এ সনদের মাধ্যমে তিনি মদিনায় ইসলামী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তাই এ সনদ সর্বকালের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক হিট্টি বলেন- Out of the religious community of Almedina the latest and large state Islam arose.

মদিনা সনদঃ 
ক. মদিনা সনদের পরিচয়ঃ ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদিনায় আগমনের পর মহানবী (স) সেখানে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন। তাই মহানবী (স) মদিনার ঐক্য ও সংহতির কথা চিন্তা করে জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল সম্প্রদায়ের লােকদের সহযােগিতা ও সমর্থন নিয়ে সকলের স্বাক্ষরিত এক লিখিত সন্ধিপত্র তৈরি করেন। ইসলামের ইতিহাসে এ সন্ধিপত্রকেই মদিনা সনদ (Charter of Meding) বলা হয়। 

খ. সনদের নামকরণঃ মদিনার পূর্ববর্তী নাম ছিল ইয়াসরেব। রাসুল (স)-এর হিজরতের পরই এর নামকরণ হয় মদিনাতুন্নবী বা নবীর শহর। এখানকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সদ্ভাব ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কতকগুলাে ধারা সম্বলিত একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যাকে প্রথমে কিতাবুর রাসূল (স) বা The charner of Mading তথা মদিনা সনদ হিসেবে নামকরণ করা হয়।

গ. মদিনা সনদের প্রধান ধারাসমূহঃ মদিনা সনদে ৫২টি ধারা ছিল। আবু ওবাইদা কিতাব আল আমওয়াল গ্রন্থে বলেন, মদিনা সনদের প্রধান ধারাগুলাের সামাজিক নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কেন্দ্রীয় প্রশাসন, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রভৃতি এবং বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা মহানবী (স)-এর ওপর ন্যস্ত করা হয়। এ সনদ বলে মহানবী ছিলেন মদিনা ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বাধিনায়ক। মদিনা সনদের প্রধান প্রধান ধারা বা শর্তগুলাে নিম্নরূপ-

১. সাধারণ জাতি গঠনঃ মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী ইহুদি, খ্রিষ্টান, পৌত্তলিক ও মুসলিমগণ মদিনা রাষ্ট্রে সমান নাগরিক অধিকার ভােগ করবে এবং একটি সাধারণ। জাতি (উম্মাহ) গঠন করবে।

২. মহানবী (স)-এর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাঃ মদিনা সনদের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (স) নবগঠিত প্রজাতন্ত্রের প্রধান নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী এবং পদাধিকার বলে। মদিনার সর্বোচ্চ বিচারালয়ের সর্বময় কর্তা হবেন।

৩. ধর্মীয় স্বাধীনতাঃ মদিনা রাষ্ট্রে পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে। মুসলমান অমুসলমান নির্বিশেষে সবাই নির্বিঘ্নে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।

৪. অভ্যন্তরীণ গােপনীয়তা রক্ষাঃ মদিনার কোনাে সম্প্রদায় মক্কার কুরাইশদের সাথে কোনাে প্রকার সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হতে অথবা এখানকার কোনাে প্রকার তথ্য তাদের সরবরাহ করতে পারবে না।

৫. বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহতঃ মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী কোনাে সম্প্রদায়কে বহিঃশত্রু আক্রমণ করতে সকল সম্প্রদায়ের লােকেরা সমবেত হয়ে সে আক্রমণ প্রতিহত করবে।

৬. পরস্পর সমঝােতাঃ সনদে স্বাক্ষরকারী কোনাে সম্প্রদায়কে বহিঃশত্রু আক্রমণ করলে সকল সম্প্রদায়ের লােকেরা সমবেত প্রচেষ্টায় বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করবে।

৭. কুরাইশদের শত্রু ঘােষণাঃ সনদে মক্কার কুরাইশদের সাধারণভাবে মদিনা রাষ্ট্রের শত্রু বলে ঘােষণা করা হয়। তাদেরকে বা তাদের সাহায্যকারীদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে এবং তাদের কোনাে প্রকার সহায়তা করা যাবে না।

৮. সুবিচারঃ সনদে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়ের কোনাে ব্যক্তি অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এজন্য তার সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।

৯. সমান অধিকারঃ মদিনার মুসলমান, পৌত্তলিক, ইহুদি, খ্রিস্টান সকলেই সমান নাগরিক অধিকার ভােগ করবে। কোনাে সম্প্রদায় অপর সম্প্রদায় অপেক্ষা বেশি নাগরিক সুযােগ সুবিধা ভােগ করতে পারবে না।

১০. সহায়তা প্রদানঃ দুর্বল ও অসহায় মানুষের প্রতি সর্বাত্মক সহযােগিতার হস্ত প্রসার এবং সকলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

১১. মদিনার পবিত্রতাঃ এ সনদে মদিনার পবিত্রতা ঘােষণা করা হলাে এবং এর সীমানায় রক্তপাত, হত্যা, বলাকার ও অপরাপর অপরাধমূলক কার্যকলাপ চিরতরে নিষিদ্ধ করা হলাে।

১২. সদ্য আইনঃ অপরাধীকে উপযুক্ত শাস্তি ভােগ করতে হবে এবং সর্বপ্রকার পাপী বা অপরাধীকে ঘৃণার চোখে দেখতে হবে।

১৩. ইহুদিদের প্রতি সুবিচারঃ মদিনা সনদে ইহুদি এবং তাদের মিত্রদেরও সমান নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা ভােগের অধিকার প্রদান করা হয়।

১৪. বিরােধ মীমাংসাঃ সনদে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনাে বিরােধ দেখা দিলে মহানবী (স) আল কুরআনের আইন অনুযায়ী তা মীমাংসা করবেন।

১৫. রক্তপণ প্রথাঃ মদিনা সনদ অনুযায়ী রক্তপণ তথা দিয়ত প্রথা পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে।

১৬. মদিনার নিরাপত্তাঃ বহিঃশত্রু দ্বারা মদিনা আক্রান্ত হলে দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সনদে স্বাক্ষরকারী সকল সম্প্রদায় যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধের ব্যয়ভার স্ব-স্ব গােত্র বহন করবে।

১৭. মানুষ হত্যা নিষিদ্ধঃ এ সনদ স্বাক্ষরের দিন থেকে সকল প্রকার রক্তপাত বা নরহত্যা হারাম বলে গণ্য হবে।

১৮. যুদ্ধনীতিঃ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে মদিনার কোনাে সম্প্রদায় কারাে বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করতে পারবে না।

১৯. রাসূল (স) এবং গােত্রপ্রধানের মর্যাদাঃ সনদে বলা হয় যে, প্রত্যেক গােত্র সম্মিলিতভাবে মহানবী (স)-এর ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব মেনে চলবে। স্ব-স্ব গােত্রীয় দলপতিদের গােত্রীয় প্রাধান্য অক্ষুন্ন থাকবে। প্রত্যেকটি গােত্র তাদের পূর্ববর্তী . চুক্তিসমূহ এবং দেয় মুক্তিপণ ও মুক্তিপণসমূহ এককভাবে প্রদান করবে। সেখানে মদিনা রাষ্ট্র কোনাে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে না।

২০. শর্ত ভঙ্গের পরিণতিঃ সর্বশেষ এ বলে শেষ করা হয়, সনদের শর্ত ভঙ্গকারীর ওপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হবে।

মদিনা সনদের ফলাফলঃ
১. রাজনৈতিক ঐক্যঃ মদিনা সনদের ফলস্বরূপ মুসলমান ও অমুসলমানদের নাগরিক জীবনে এক তুলনাবিহীন রাজনৈতিক ঐক্য স্থাপিত হয়। এতে করে অবিরাম যুদ্ধরত গােত্রগুলাের মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখা দেয় এবং মদিনায় শান্তিপূর্ণ প্রজাতন্ত্রের সূচনা হয়।

২. শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাঃ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর দেয়া নতুন সংবিধান, অনুযায়ী গৃহযুদ্ধ ও অনৈক্যের স্থলে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে প্রত্যেক মানুষের জান-মালের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

৩, সমঅধিকারঃ কর্তব্য ও জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মদিনার সকল নাগরিককে এ সনদ সমঅধিকার ও কর্তব্য দান করে। ড. ইবরাহীম বলেন, এ সনদের মাধ্যমে সমাজের সকল সদস্য নিজ নিজ অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে অবহিত হয়।

৪. সম্প্রীতি স্থাপনঃ মদিনা সনদ মদিনার মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তােলে।

মদিনা সনদের গুরুত্ব/তাৎপর্যঃ মদিনা সনদ এক অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। মদিনা সনদকে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সনদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মদিনা সনদের গুরুত্ব নিম্নে আলােচনা করা হলাে-

১. প্রথম লিখিত সংবিধানঃ ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (স) কর্তৃক প্রণীত মদিনা সনদ পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান। এ প্রসঙ্গে ড. হামিদুল্লাহ বলেন, “মােট ৫২টি ধারা বিশিষ্ট এ সনদটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র।” ইসলামপূর্ব যুগে পৃথিবীর কোথাও কোনাে লিখিত শাসনতন্ত্র ছিল না। তখন সমাজে আইনের শাসন পরিলক্ষিত হয়নি। শাসনকর্তাদের মুখ থেকে উচ্চারিত বাণীই ছিল আইন। পিকে হিট্টি বলেন, It was the first written constitution of the world.

২. মহানবীর শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিঃ মদিনা সনদের মাধ্যমে মহানবী (স) সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। মদিনার সর্বময় ক্ষমতা তার হাতেই ছিল। উইলিয়াম মুর যথার্থই মন্তব্য করেছেন- If revegls the man (the prophet) in his real greatness a mastermind, not only of his own age, out of all ages.অর্থাৎ, মদিনা সনদ শুধু সে যুগেই নয়; বরং সর্বযুগেই মুহাম্মদ (স)-এর বিরাট মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘােষণা করে।

৩. উদারতার ভিত্তিতে জাতি গঠনঃ এ সনদের মাধ্যমে মদিনার সকল ধর্মের লােক উদারনীতি গ্রহণ করে। মহানবীর উদারনীতিতে আকৃষ্ট হয়ে সকল ধর্ম-জাতি মিলে এক বৃহত্তর জাতি গঠনের পথ সুগম করে।

৪. ইসলামী রাষ্ট্রের গােড়াপত্তনঃ মদিনা সনদের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম একটি ইসলামী রাষ্ট্রের গােড়াপত্তন এবং সর্বপ্রথম ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বীজ উপ্ত হয়। এ সনদের মাধ্যমে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব স্বীকার করা হয় এবং ঐশীতন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয়।

৫. ইসলামের ধর্মীয় ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ এ সনদের ফলে মদিনায় ইসলামের ধর্মীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রচার ও ইসলামী সাম্রাজ্য স্থাপনের ভিত রচিত হয়।

৬. স্বদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার গ্যারান্টিঃ এ সনদে স্বদেশ রক্ষার জন্য মুসলিম অমুসলিম সকলের ওপরই সমান দায়িত্ব আরােপিত হয়। বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এতে করে মদিনা নতুন রাষ্ট্র রক্ষার গ্যারান্টি নিশ্চিত হয়।

৭. স্থিতিশীল সংবিধানঃ ড. হামিদুল্লাহর মতে, এ সংবিধানটি খুবই স্থিতিশীল ছিল। মহানবী (স)-এর সময়কার ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি এ সনদের অনুসরণে বিশাল সাম্রাজ্যের রূপ লাভ করে। কারণ এ সনদ তখনও প্রয়ােজন মেটাতে সক্ষম হয়।

৮. শাসক শাসিতের দায়িত্বানুভূতিঃ এ সনদের মাধ্যমে শাসক ও শাসিতের মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্যবােধ জাগ্রত হয় । আইনের দৃষ্টিতে রাজা-প্রজা সকলেরই জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা হয়।

৯. ইসলামের আন্তর্জাতিকতাবাদঃ এ সনদের মাধ্যমে ইসলামের আন্তর্জাতিকতাবাদ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ইসলাম তার উদার মনােভাব নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ স্থাপন করতে পেরেছে। ফলে কালক্রমে জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ ইসলামের উদারনীতি গ্রহণ করতে থাকে।

১০. গণতান্ত্রিক মূল্যবােধ প্রতিষ্ঠাঃ মদিনা সনদের মাধ্যমে গােত্রপ্রথার বিলােপ সাধন ও স্বৈরাচারী শেখতন্ত্রের পরিবর্তে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও ইসলামী গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১১. ধর্মীয় উদারতাঃ মদিনা সনদ সকল ধর্মের লােকদের সমান ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে এবং নির্বিঘ্নে যার যার দ্বীন ধর্ম পালনের নিশ্চয়তা বিধান করে। ‘কেউ কারাে ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না’- এ নীতি প্রবর্তিত হয়।

১২. জীবিকা ও বাসস্থানঃ মদিনা সনদের ফলে মুহাজিরদের জীবিকা উপার্জন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা এবং আনসার মুহাজিরদের ভাতৃত্ব বন্ধন বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য।

১৩ শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়কঃ এ সনদে প্রতীয়মান হয় মহানবী (স) বিশ্বের একজন। শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক, সমরনায়ক ও বিপ্লবী মহাপুরুষ ছিলেন। ড, করাই বলেন, সনদের মাধ্যমে মহানবী (স) সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়কে ভূষিত হন।

১৪. প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠাঃ মহানবী (স) তৎকালীন বিশ্বে ধর্ম ও রাজনীতির সমন্বয়ে যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, উত্তরকালে তা বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। পি. কে. হিট্টি যথার্থই বলেছেন, মদিনা প্রজাতন্ত্রই পরবর্তীকালে ইসলামী সাম্রাজ্যের ভিত্তিমূল স্থাপন করে।

উপসংহারঃ বিশ্বের ইতিহাসে মদিনা সনদের গুরুত্ব অপরিসীম। এ সনদের মাধ্যমেই মদিনার বুকে শান্তির ঝরনাধারা প্রবাহিত হয়। তাই প্রাচ্যের মনীষীগণ আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন- Oh men of the world if you want to find out the place from this world you never find you may go to Medina, you may go to Medina.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক