১. হিসাববিজ্ঞান পরিচিতি
Introduction to Accounting
মানব সভ্যতার শুরু থেকেই ‘হিসাব’ মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন ব্যবস্থার সাথে ওতপ্রােতভাবে জড়িত। আদিকালে মানুষ যখন বনে, জঙ্গলে ও পাহাড়ের গুহায় বসবাস করত-
তখন তারা গুহার অভ্যন্তরে প্রয়ােজনীয় খাবার সংগ্রহ করে রাখত। তারা গুহার গায়ে খােদাই করে বা ছবি এঁকে বা পাথরের গায়ে চিহ্ন এঁকে ফলমূল ও শিকারের সংখ্যার হিসাব রাখত। এ গণনা থেকেই মূলত হিসাব লিখনের ভিত্তি তৈরি হয়। এরপর জীবনধারণের তাগিদে মানুষ দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য অথবা সেবার বিনিময়ে দ্রব্যের নেওয়া-দেওয়া শুরু করে। কালের বিবর্তনে মানুষ যখন দ্রব্য বা সেবার নেওয়া-দেওয়া অর্থের অংকে পরিমাপ করা শুরু করল মূলত তখন থেকেই হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি।
হিসাববিজ্ঞান পরিচিতি, প্রথম অধ্যায়, একাদশ শ্রেণী
ব্যক্তি জীবন তথা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতিনিয়ত অসংখ্য এবং বৈচিত্র্যময় আর্থিক লেনদেন সংঘটিত হচ্ছে। এসব লেনদেনের সাথে জড়িত পক্ষসমূহ সর্বদা আর্থিক লেনদেনের ফলাফল জানতে আগ্রহী। কিন্তু নির্দিষ্ট পদ্ধতি বা কৌশল ব্যতীত এসব লেনদেনের ফলাফল বা প্রভাব জানা সম্ভব হয় না। ব্যবসায়ের লেনদেন চিহ্নিতকরণ, ফলাফল নির্ণয় এবং দায়-দেনা ও সম্পত্তির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য এক বা অভিন্ন হিসাব ব্যবস্থার উদ্ভাবন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪৯৪ সালে লুকা প্যাসিওলি (Luca Pacioli) নামক একজন ইতালিয় ধর্মযাজক ও গণিত শাস্ত্রবিদ তার যুগান্তকারী “Summa de Arithmetica geometria. Proportioni : et proportionalita" বইয়ে আধুনিক হিসাববিজ্ঞানের মূলভিত্তি দু'তরফা দাখিলা পদ্ধতি আলােচনা করেন। এই দু'তরফা দাখিলা পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আধুনিক হিসাববিজ্ঞান। বর্তমানে হিসাববিজ্ঞান হলাে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবেশন ব্যবস্থা যা একই সাথে ব্যবহারিক ও সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে কাজ করছে।
0 মন্তব্যসমূহ